বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গমাতা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র : জিয়াউদ্দিন

217

ঢাকা, ৯ আগস্ট ২০২০ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেছেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ।
বঙ্গমাতার ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আজ এখানে প্রাপ্ত দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গমাতার জীবনের উপর আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ, বিশেষ মোনাজাত এবং জন্মদিনের কেক কাটা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বঙ্গমাতার জীবনীর বিভিন্ন দিক আলোকপাত করে বলেন, তাঁর জ্ঞান, সাহস, দূরদৃষ্টি এবং বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিনতির দিকে নিয়ে গেছে।
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব একদিকে নিজের সংসার, ছেলে-মেয়েদের দেখাশুনা করেছেন অন্যদিকে গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগের নেতাদের পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন এবং সংগঠনকে সঠিক পথে চালিয়ে নিতে সাহায্য ও পরামর্শ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে লাহোরে গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বেগম মুজিব প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন এবং নিঃশর্ত মুক্তির কথা বলেছিলেন, যদিও ঐ সময় অনেক আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তির পক্ষে ছিলেন।
রাজনৈতিক পন্ডিতদের উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, যদি সেদিন বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি নিয়ে গোল টেবিল বৈঠকে যোগদান করতেন, তাহলে হয়তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুদূর পরাহত হতো।
জিয়াউদ্দিন বলেন, বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে জেলখানায় তাঁর “অসমাপ্ত জীবনী” লিখতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন। এছাড়া, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ৭মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ এবং বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবানের পিছনে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রেরণা ও সম্মতি ছিল।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। তিনি পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে নিগৃহীত মেয়েদের পাশে দাঁড়ান এবং তাদেরকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করেন। বেগম মুজিব অনেক গরীব পরিবারের মেয়েদের বিবাহেরও ব্যবস্থা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন,তাঁর প্রজ্ঞা, সাহসিকতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুকে সাহস এবং সঠিক উপদেশদান করার জন্য বাঙালি জাতি সঠিকভাবেই তাঁকে “বঙ্গমাতা” হিসেবে সম্মান ও স্বীকৃতি দিয়েছে।
দূতাবাসের ডিফেন্স এ্যাটাসে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈনুল হোসেন এবং মিনিস্টার (প্রেস) শামিম আহমদ যথাক্রমে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। দূতাবাসের প্রথম সচিব এবং চ্যান্সারী প্রধান মোঃ মাহমুদুল ইসলাম অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
পরে রাষ্ট্রদূত এবং মিসেস ইয়াসমিন জিয়াউদ্দিন বঙ্গমাতার জন্মদিনের কেক কাটেন।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং তাদের সহধর্মিনী, কর্মচারীবৃন্দ এবং শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করেন। সবশেষ বিশেষ মোনাজাত করা হয়।