বাসস দেশ-১৯ : লঞ্চ মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিবেন না : নৌপরিবহন মন্ত্রী

329

বাসস দেশ-১৯
ঈদ- নৌ-ব্যবস্থাপনা
লঞ্চ মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিবেন না : নৌপরিবহন মন্ত্রী
ঢাকা, ২৭ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে আরোহন না করার জন্য যাত্রীসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ঢাকায় বিআইডব্লিউটিএ ভবনে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে লঞ্চ, ফেরিসহ জলযানসমূহ সুষ্ঠুভাবে চলাচল, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত সভায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী সভায় বলেন, “অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে আরোহন করবেননা, লঞ্চের ছাদে উঠবেননা। মালিকরা লঞ্চের অতিরিক্ত ভাড়া নিবেননা। ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ চালাবেননা। আবহাওয়া বার্তা মেনে দক্ষ চালক দিয়ে নৌযান চালাবেন। গরুর গাড়ি পারাপারে প্রাধান্য দিবেন। পর্যাপ্ত ফেরির ব্যবস্থা রাখবেন। গার্মেন্টসে পর্যায়ক্রমে ছুটির ব্যবস্থা করবেন।”
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঢাকার সদরঘাটে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি আনসারসহ কমিউনিটি পুলিশের ব্যবস্থা এবং সদরঘাট থেকে বাহাদুরশাহ পার্ক পর্যন্ত রাস্তা হকারমুক্ত রাখা হবে।
সদরঘাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্টীলের ডাষ্টবিন স্থাপন, জনগণকে ডাষ্টবিন ব্যতীত নদীতে কিংবা পন্টুন বা গ্যাংওয়েতে ময়লা আবর্জনা ফেলতে নিরুৎসাহিত করা এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিতকরণ পর্যায়ক্রমে সকল ঘাটে এ ব্যবস্থা চালুকরা হবে। টার্মিনালসমূহে সতর্কমূলক বানী মাইকে ও মনিটরে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
সভায় জানানো হয় যে, ঘাট ইজারাদার কর্তৃক যাত্রী হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ’র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং লঞ্চে যাত্রী ওঠার সময় থেকে লঞ্চের চালক, মাষ্টার ও অন্যান্য কর্মচারীদের অবস্থান নিশ্চিতকরতে হবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায়ে এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী উঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্পীডবোটে চলাচলের সময় যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, রাতের বেলায় সকল প্রকার মালবাহী জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, শ্রমিক, যাত্রীদের হয়রানি ও ভীতিমূলক অবস্থা প্রতিরোধ করার জন্য রাতে পুলিশের টহলের ব্যবস্থা এবং নদীতে এলোমেলোভাবে ট্যাংকার, লঞ্চ, কোষ্টার বার্জ ইত্যাদি চলাচল নিয়ন্ত্রণ। কোন ক্রমেই লঞ্চের যাত্রী ও মালামাল ওভারলোড করা যাবে না। প্রত্যেক লঞ্চের সিড়িতে দুই পার্শ্বে প্রশস্ত রেলিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে। সদরঘাট, নদীর মাঝপথ থেকে নৌকা দিয়ে যাত্রী লঞ্চে বা নৌযানে উঠতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে নিয়োজিত করতে হবে। কেবিনের যাত্রীদের ছবি বা মোবাইল নম্বর বা জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর সংরক্ষণ করতে হবে।
সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, ঈদের আগে ৩দিন ও ঈদের পরে ৩ দিন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ব্যতীত সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরী পারাপার বন্ধ রাখা। লঞ্চের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিতকল্পে নৌপথে সকল মাছ ধরার জাল পাতা বন্ধ রাখা। নৌযানে পর্যাপ্ত বয়া এবং নৌপথে বাতি ও মার্কিং এর ব্যবস্থা করতে।
শিমুলিয়া-কাঁঠালড়ী এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াসহ অন্যান্য সকল নৌ-চ্যানেলে প্রয়োজনীয় ড্রাফট নিশ্চিতকরণ। ফেরীঘাট ব্যবস্থাপনা কমিটি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা নিয়ে ঘাটে নির্বিঘœ সিরিয়াল প্রদানের ব্যবস্থা করবে।
বিআইডব্লিউটিএ, জেলা প্রশাসন, ঢাকা, পুলিশ বিভাগ, লঞ্চ মালিক শ্রমিক কর্তৃপক্ষ, কোস্টগার্ডসহ লঞ্চ, স্টীমার মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সভা অনুষ্ঠান এবং সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, লঞ্চ মালিক, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সভা করে ব্যবস্থাপনার দিকসমূহ নির্ধারণ। সার্বিক অবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভিজিলেন্স টিম গঠন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ফেরীঘাট ও লঞ্চঘাটসমূহে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রনের জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। গার্মেন্টস ও নিটওয়্যর সেক্টরে ঈদের ছুটি পুনঃবিন্যাস করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই, বিজেএমইএ, বিকেএমইএ এর সঙ্গে সভা কররতে হবে। সংশ্লিষ্ট জেলার নৌযান, নৌপথ, পরিবহনের সাথে সম্পৃক্ত সকলের সমন্বয়ে স্থানীয়ভাবে সচেতনতামূলক সভা করা হবে।
সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ী নৌ রুটে নৌ দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য পদ্মা নদীতে ঘূর্ণাবর্ত এলাকা মার্কিং করতে হবে। দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া নৌ যান বা লঞ্চ বা জাহাজের অবস্থান যাতে সনাক্ত করা যায় সেজন্য প্রত্যেক নৌ যান বা লঞ্চ বা জাহাজের ছাদের সাথে ২০০ বা ৩০০ ফুট শক্ত রশি দিয়ে একটি বড় প্লাষ্টিক কন্টেইনার বা বয়া বেঁধে রাখতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল হক, নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, ডিআইজি নৌপুলিশ মোঃ মারুফ, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বক্তব্য রাখেন।
বাসস/সবি/এমএন/১৯৫০/-আসচৌ