বাসস দেশ-১৮ : খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অবিলম্বে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ণের আহ্বান

385

বাসস দেশ-১৮
খাদ্য-ক্যাম্পেইন-উদ্বোধন
খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অবিলম্বে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ণের আহ্বান
ঢাকা, ২৫ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে খাদ্য, পুষ্টি ও সুপেয় পানির অধিকার নিশ্চিতে অবিলম্বে ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়ণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট খাতের অংশীজনেরা।
তারা বলেছেন, এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারেও এ সংক্রান্ত অঙ্গীকার থাকতে হবে।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ আয়োজিত দেশব্যাপী জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৮ জুড়ে ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সরকারী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা আলোচনায় এই আহ্বান জানান।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ অনুষ্ঠানে খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইন-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে সারা দেশের ৫০টিরও অধিক জেলা থেকে আসা নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের ভাইস-চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল করীম, দৈনিক ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, একশনএইড-এর স্থানীয় পরিচালক ফারাহ কবীর, আইসিসিও ইন্টারন্যাশনালের স্থানীয় প্রতিনিধি টেসা স্কেমেলজার, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি এলি ভ্যালেনটাইন, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কর্মসূচি পরিচালক হেলেন ওয়ার, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা (অনুষ্ঠান) নওয়াজিশ আলী খান প্রমুখ।
ক্যাম্পেইনের প্রেক্ষাপট আলোচনা ও কর্মসূচি উত্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচনী ইশতেহারে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের দাবিতে সংগৃহীত হবে ২৫ লাখ স্বাক্ষর।
পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, যাদের কাছে উন্নয়ন এখনও পৌঁছায়নি, যারা খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রভৃতি অধিকার থেকে বঞ্চিত তাদের জন্যই আমরা খাদ্য অধিকার আইন চাই। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন। আমরা আশা করছি সরকার এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সংবিধানে ‘জীবনের অধিকার’ শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে, মানুষ জন্মগ্রহণ করলেই তার জীবনধারণের জন্য খাদ্যসহ সকল মানবাধিকার অর্জনের অধিকারী হয়। এজন্য আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা যদি খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করতে পারে, বাংলাদেশেরও তা করা উচিত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ ক্যাম্পেইনের সাথে প্রয়োজনীয় সকলক্ষেত্রে সম্পৃক্ত থাকবে বলে উল্লেখ করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইনে’ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মানুষকেও সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।
রাশেদা কে চৌধুরী ক্যাম্পেইনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, ঘরের খাদ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকেন নারীরা। এ আন্দোলনেও তাদেরকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করতে হবে। সব কাজ সরকার করে দেবে তা ভেবে যেন আমরা বসে না থাকি।
তিনি বলেন, খাদ্য অধিকার আইন যদি প্রণীত হয়, এর প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা যেন সম্পৃক্ত থাকেন সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখতে হবে। আইন বাস্তবায়নে তার যথাযথ অর্থায়ন ও মনিটরিং প্রয়োজন। খাদ্য ও পুষ্টির পাশাপাশি সুপেয় পানির দাবিটিও এই আইনে থাকা জরুরী।
পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল করীম বলেন, ‘সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই খাদ্য অধিকার আইন হওয়া উচিত। বর্তমান সরকারসহ দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে সকল রাজনৈতিক দল সোচ্চার থাকবে, ইশতেহারে এমন অঙ্গীকার থাকতে হবে।’ পিকেএসএফ তার সকল সহযোগী সংগঠনকে সাথে নিয়ে এ ক্যাম্পেইনকে সফল করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, আইন হলে সেই আইন যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
ফারাহ কবীর বলেন, শুধু স্বাক্ষর সংগ্রহ নয়, সকল মানুষকে খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার বিষয়ে যথাযথভাবে অবহিত করতে হবে। খাদ্য অধিকার আইন হলে তা যেন নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও আদিবাসী বান্ধব হয়। ক্যাম্পেইনে ইলেকট্রোনিক ও সোশ্যাল মিডিয়াকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে।
বাসস/এএসজি/এমএন/১৭২৫/অমি