বাসস দেশ-১৪ (লিড) : ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৪১ জন, নতুন আক্রান্ত ৩,৩০৭ জন

104

বাসস দেশ-১৪ (লিড)
করোনা-ব্রিফিং
২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৪১ জন, নতুন আক্রান্ত ৩,৩০৭ জন
ঢাকা, ৯ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনা শনাক্তের ১২৪তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ২ হাজার ২৩৮ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৫ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪৬ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের দিনও এই হার ছিল ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৬৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৩০৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৮২ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ৬৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ৩ হাজার ৪৮৯ জন।
তিনি জানান, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৪ হাজার ৭৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭০৬ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৯৭০ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ৭৩৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮৪ হাজার ৫৪৪ জন।
তিনি জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৪৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার ১ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৮৬২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৮৮৩ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২১টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৭৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৩২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৬৭২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৪০টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ; ৭৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং ১২ জন নারী; ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ০ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৭৭০ জন এবং নারী ৪৬৮ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে দশমিক ৬৩ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সের ৪৪ দশমিক ১৯ শতাংশ।
তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, সিলেটে ২ জন, রংপুরে ৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৮ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে বিভাগওয়ারী ঢাকা বিভাগে ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৭৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৫৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২২ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ২৮২ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৮১ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৪ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৫ জন ছাড়া পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৩ হাজার ১০৬ জন।
তিনি জানান, ‘ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৩০৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫২৩ জন এবং শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৭৮২টি। ঢাকা মহানগরীতে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ১৪২টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ৮৬ জন এবং খালি আছে ৫৬টি শয্যা। ঢাকা মহানগরীতে ভেন্টিলেটর সংখ্যা ১৫০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৫৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৩৩৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৩২৩ টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২০ জন এবং খালি আছে ১৯টি শয্যা। চট্টগ্রাম মহানগরীতে ভেন্টিলেটর সংখ্যা ৩৮টি। সারাদেশে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৪৫টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৫৯৬ জন। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১৯১ জন। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৬৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ১৩৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৯৯টি।সারাদেশে ২৪ ঘন্টায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৪১৮ জন এবং ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ৫৩৪ জন।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে বলে তিনি জানান।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ৪ হাজার ৩শ’টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ২৮ হাজার ২৪৫টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৪ লাখ ৪২ হাজার ১৬৪টি। বর্তমানে ৮৬ হাজার ৮১টি পিপিই মজুদ রয়েছে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির গ্লাভস মজুদ আছে ৯ লাখ ৮১ হাজার ৪২৮টি, বিভিন্ন ক্যাটাগরি ও লেভেলের মাস্ক মজুদ আছে ৩১ লাখ ৫ হাজার ৩১৯টি, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ১১ লাখ ৬১ হাজার ৮২৯টি এবং গগলস ১২ লাখ ২৬ হাজার ৮৬২টি মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৩টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখ ৮৩ হাজার ৬২১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৬১ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গত ২৪ ঘন্টায় যুক্ত হয়েছেন ৭ জন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৫৬১ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ৪৮ হাজার ২০৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৮ জুলাই পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ২৬৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ১ হাজার ৬৫৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৬০৫ জন এবং এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ২২৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৮ জুলাই পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ২৫৯ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ১৪৭ জন এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯০৬ জন বলে তিনি জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।
বাসস/এএসজি/এমএসএইচ/১৬৪৫/কেজিএ