বাজিস-৩ : ঠাকুরগাঁওয়ে চিনাবাদামের আবাদ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

148

বাজিস-৩
চিনাবাদাম-চাষ
ঠাকুরগাঁওয়ে চিনাবাদামের আবাদ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
ঠাকুরগাঁও, ৭ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : জেলার চাষীরা ক্রমেই চিনাবাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে অনেক চাষী অন্যান্য ফসলের চাষ এর চেয়ে ক্রমেই বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। দিন-দিন বাড়ছে চিনা বাদামের আবাদ।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন জানান, চিনাবাদাম একটি অর্থকরী ফসল। ফলনও ভাল এবং দামও ভাল। অন্যান্য ফসলের চাইতে বাদাম দাম উচ্চ মূল্য হওয়ায় এ জেলায় বাদামের আবাদ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এজন্য চিনাবাদামের নতুন-নতুন জাত সরবরাহ করা হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় রবি মওসুমে চিনাবাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২৪ হেক্টর এবং অর্জিত হয় ১৮ টন। অপরদিকে খরিপ-১ মওসুমে চিনাবাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩২৬ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৩৩২ হেক্টর জমি। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাতা ধরা হয় ৫৫৪ দশমিক ২০ টন।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও কৃষি নির্ভর জেলা, এ জেলার চাষীরা বংশ পরম্পরায় ধান পাট গম ও আলু চাষাবাদ করে আসছে। কিন্তু প্রতিবছর এসব কৃষকরা উৎপাদন করেও খুব বেশি লাভবান না হলেও চিনা বাদাম চাষ করে লাভবান হয়ে আসছেন। আর একমাত্র চিনা বাদাম চাষ করে লোকসানের আশংকা কম। আর উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা বেশি লাভের আশা ঝুঁকছেন এ চিনা বাদাম চাষে। অন্যান্য ফসলের ন্যায় জমিতে বীজ বপন করে কয়েকবার নিড়ানী ও সেচ দিয়ে উৎপাদন করছেন চিনাবাদাম। জেলার বালিয়াডাঙ্গী ও সদর উপজেলার গড়েয়া, ভুল্লি বালিয়া ও রাজাগাঁও এলাকায় কয়েক বছর আগে শুরু হয় বাদামের চাষাবাদ। যেসব চাষী একবার লাভবান হচ্ছেন পরবর্তীতে তিনি বাড়াচ্ছেন বাদামের জমির আওতা।
সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করতে খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমিতে চিনাবাদাম উৎপাদন হয় ১২ মন। প্রতিমণ কাঁচা বাদামের দাম আড়াই হাজার টাকা হিসেবে এক বিঘা জমিতে আয় হয় ৩০ হাজার টাকা। খরচ ১০ হাজার বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি লাভ হয় ২০ হাজার টাকা। তবে বাদাম শুকিয়ে ঘরে সংরক্ষণ করলে লাভ আরো বেশি হয়।
কয়েক বছর আগে ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সীমিত আকারে বাদাম চাষ শুরু হলেও বর্তমানে প্রতিবছর বাড়ছে বাদাম চাষের আওতা।
সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কৃষক আজিজুৃর রহমান ও আকবর আলী জানান, চিনা বাদাম লাভজনক ফসল। বিগত কযেক বছরের তুলনায় এখানে চিনা বাদামের চাস বেড়েছে। খরচ কম আর লাভ ভালো হওয়ায় এবার আমাদের ইউনিয়নের বেশির ভাগ কৃষকই চিনা বাদাম চাষি করেছেন। কৃষকরা চিনা বাদাম চাষে ঝুকে পড়েছেন।
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ডাঙ্গী গ্রামের কৃষক রহমত আলী জানান, তিনি এবার ৩বিঘা জমিতে চিনা বাদাম চাস করেছেন। আশা করছেন ভালো লাভ পাবেন। চিনা বাদামের চাহিদা থাকায় এবং বাজারে দাম ভালো থাকায় এই ফসলের চাষ ও উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে বলেও জানান তিনি। আগামী বছরেও অন্যান্য ফসলের সাথেও চিনা বাদাম চাষ করবেন এ কৃষক বলেও জানান তিনি।
বাসস/সংবাদদাতা/১১৪২/কেজিএ