জয়পুরহাটে আমন ধানের চারা রোপণে ধুম পড়েছে

775

জয়পুরহাট, ২৪ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটের সর্বত্র রোপা আমন ধানের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। আষাঢ়-শ্রাবণ দীর্ঘ দু’মাস ধরে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খরার কবলে পড়ে জয়পুরহাট। গত ৩ দিনে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে তাপদাহ কমার পাশাপাশি কৃষকরা এখন আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় চলতি ২০১৮-২০১৯ মৌসুমে ৭২ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ৬৬ হাজার ৯২০ হেক্টর, হাইব্রিড জাতের ৪ হাজার ১৭৯ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের রয়েছে এক হাজার ২১ হেক্টর। এতে চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন । কিন্তু কৃষকরা জমি চাষ-খোড় দিয়ে প্রস্তুত করলেও আষাঢ়-শ্রাবণ দীর্ঘ দু’মাস ধরে জেলায় তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় একদিকে যেমন তাপদাহ বৃদ্ধি পায়, অন্য দিকে আমনের চারা রোপণও বিলম্ব হতে থাকে। কৃষি বিভাগের হিসেব মতে গত বছর এ সময় (১৯ জুলাই’২০১৭) ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হলেও চলতি বছর ১৯ জুলাই রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ৫৩ মিলিমিটার। ফলে বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম হওয়ায় রোপা আমন চাষ ব্যহত হওয়ার আশংকায় সেচযন্ত্র (গভীর ও অগভীর নলকূপ) ব্যবহার করে জমিতে পানি সেচের মাধ্যমে আমনের চারা রোপনের পরামর্শ প্রদান করে কৃষি বিভাগ। এ ক্ষেত্রে আমন ধানের চারার বয়স বেশি হলে ফলন কম হওয়ার আশংকা থাকলেও আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রোপা আমনের চারা লাগানো সম্ভব হলে ফলনে তেমন সমস্যা হবে না বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায়।
দীর্ঘ খরা ও তাপদাহের পর গত শনিবার মধ্যরাত থেকে বৃষ্টির দেখা পায় জেলা বাসী। তিন দিনে ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার সর্বত্র এখন আমন ধানের চারা রোপণের ধুম পড়েছে কৃষকের মাঝে।
কৃষি বিভাগ জানায়, জয়পুরহাটে চলতি ২০১৮-১৯ মৌসুমে রোপা আমন চাষ সফল করতে ৩ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪০ হেক্টর বেশি।
অপরদিকে অব্যাহত খরার কারণে পুকুর ডোবায় পানি না থাকায় বিপাকে পরেন পাট চাষিরা। পাট পচানোর মতো পানি না থাকায় পাট কাটতে পারছেন না। চলতি ২০১৮-১৯ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৭১১ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত তিন দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে এখন পাট পচানোর সমস্যা হবে না বলে জানায় কৃষি বিভাগ।