ভবিষৎ স্বপ্ন অর্জনে তরুণরাই হচ্ছে আমাদের মূল যোদ্ধা

227

ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : আওয়ামী লীগের বিশেষ ওয়েবিনারের ৮ম পর্বে বক্তারা তরুণদেরকে ভবিষ্যত বাংলাদেশ নির্মানের মুল যোদ্ধা হিসেবে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
দলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত এই লাইভ অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, ‘আমাদের ভবিষৎ স্বপ্ন অর্জনে তরুণরাই হচ্ছে মূল যোদ্ধা’।
করোনাকাল ও পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’-এর ৮ম পর্ব মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বিষয় ছিলো ‘তরুণদের শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি : আগামীর কৌশল নির্ধারণ।’ রাত সাড়ে ৮ টায় বরাবরের মতোই পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/awamileague.1949  এবং অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে https://www.youtube.com/user/myalbd. একই সঙ্গে দেখা যায় বিজয় টিভির পর্দায় এবং ইত্তেফাক, সমকাল, যুগান্তর, ভোরের কাগজ, বিডিনিউজ২৪, বাংলানিউজ২৪, জাগো নিউজ২৪ ও সময় টিভি, বার্তা ২৪ ও সারা বাংলার ফেসবুক পেজে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর, গুরুকুল অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম-এর প্রতিষ্ঠাতা সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর, দৈনিক জনকন্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার বিভাষ বাড়ৈ।
আলোচনার শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি বলেন, গত ১৭ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর ২৯ মার্চ থেকে সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের ক্লাশ চালু করেছি। যেখানে সাধারন শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা সমান তালে চলছে। এছাড়াও অনলাইনে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষাথীদের ক্লাশ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা দেশব্যাপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জরিপ করে দেখেছি ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ৯২ শতাংশ শিক্ষাথীদের কাছে পৌছাতে পারছি। বাকি শিক্ষাথীদের জন্য যাদের কাছে অনলাইনে পৌছাতে পারছি না তদের কাছে পৌছাতে ৩৩৩৬ নাম্বারে মোবাইল ফোন কলের মাধ্যমে শিক্ষকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে পড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, কমিউনিটি রেডিও চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে আর কিভাবে পৌছানো যায় সেব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি আগামি নভম্বরের মধ্যে বার্ষিক সিলেবাস গুলো মোটামুটি শেষ করে নিতে পারবো। অনুকুল পরিবেশ শুরু হলে এইচএসসিসহ সকল পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ইশতেহারে আমরা সবসময় তরুনদেরকে গুরুত্ব দিয়েছি। শেখ হাসিনা এই তরুনদেরকে যুক্ত করেছেন আমাদের স্বপ্নের সঙ্গে, জাতীয় স্বপ্নের সঙ্গে, এই জাতীয় স্বপ্ন অর্জনের পথে তরুনরাই আমাদের ভবিষৎ, তরুনরাই হচ্ছে মূল যোদ্ধা। তরুনদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলা ও দক্ষতার শিক্ষার উপরও জোড় দেন তিনি।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, করোনার প্রভাবে সারাবিশ্বের মত আমাদের যুব সম্প্রদায় যারা বিভিন্ন কর্মস্থলে, আছেন তারা অনেকেই আংশিক বা পুরোপুরি বেকার হয়ে যাবে, এই হঠাৎ বেকার হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে যারা গ্রামে চলে গেছেন বা যাবেন ভাবছেন তাদের সেখানেই আত্মকর্মসংস্থান স্মৃষ্টির জন্য এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষন দেয়া এবং তাদের জন্য লোনের ব্যবস্থা করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আগে লোনের ক্ষেত্রে যে ইন্টারেস্ট দিতে হতো আমরা সেটা অর্ধেকে নামিয়ে নিয়ে এসেছি। এই মুজিব বর্ষে কেউ যাতে বেকার না থেকে সেই উপলক্ষে কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাথে চুক্তি করে “বঙ্গবন্ধু যুব ঋন” নামে একটি প্রকল্প চালুর ব্যবস্থা করেছি- যেখানে নিম্নে ২০ হাজার টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋন সুবিধা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা সারাদেশে বেকার হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আর সে হিসেবে তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করবো। আমাদের টার্গেট রয়েছে আগামি ৩ বছরের মধ্যে ১২ লক্ষ দক্ষ যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল যুগের সুফল হিসেবে আমরা এখন অনলাইনে আনুষ্ঠানিকতার বাইরে গিয়ে হাত তালির চিন্তা বাদ দিয়ে আলোচনা করতে পারছি, এতে আমাদের মনজগতের একটা পরিবর্তন এসেছে। তথ্য প্রযুক্তি অবকাঠামো এখন আগের থেকে অনেক শক্তিশালি, ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়, সেটা আজ বাস্তবতা। আমরা এখন ঘরে বসে থেকেই মন্ত্রনালয়ের কাজ করছি, অনলাইনে শিক্ষকরা ক্লাশ নিচ্ছেন, জরুরি মিটিং করছি।
দৈনিক জনকন্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার বিভাষ বাড়ৈ বলেন, আমি মনে করি শিক্ষা মন্ত্রনালয় এখনো সঠিক অবস্থানে আছে। সবার কাছে এখন নিরাপত্তা আগে। ছাত্র ছাত্রীদের জন্য মন্ত্রনালয় এখন সঠিক অবস্থানে আছে এবং সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। হয়তো বাজে সিচুয়েশন বাড়লে স্বাভাবিক ভাবে পরীক্ষা ক্লাস নিতে পারবে না। দীর্ঘ হলে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থা বেশি স্থিতিশীল রয়ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, আমাদের শিক্ষা মন্ত্রী যেভাবে কাজ করছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। আমরা দেখতে পেলাম অনলাইন শিক্ষার যে কয়টি পদ্ধিতি আছে, প্রত্যেকটি পদ্ধতিতে সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’-এর সাতটি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ পর্বটি প্রচারিত হয়েছে গত ২৭ জুন। এই পর্বে আলোচকরা ‘জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার’ যেখানে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা এই সংকটে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি, স্বাস্থ্যবিধি পালনে উদ্বুদ্ধ করা, জলাবদ্ধতা নিরসন, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।