কেশবপুরে ভাসমান বেডে সবজি চাষ

920

যশোর, ২২ জুন, ২০২০ (বাসস) : যশোরের কেশবপুর উপজেলার হরিহর নদীর বদ্ধ পানিতে ভাসমান বেডে (ধাপে) সবজি আবাদ করা হয়েছে।
মধ্যকুল রাজবংশীপাড়ায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এলাকার কৃষকরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন।
মধ্যকুল রাজবংশীপাড়ায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এলাকার কৃষকরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন। যাদের বসতভিটা ছাড়া জমি নেই এমন যুবকেরা ওই নদীর শেওলা দিয়ে ধাপ তৈরি
করে তার ওপর বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করেছেন। এতে তাদের সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হরিহর নদীতে নাব্যতা না থাকায় শেওলায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। ওই নদীর তীরবর্তী মধ্যকুল রাজবংশীপাড়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে ব্যর্থ হয়ে বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় ওই নদীর শেওলাকে কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
গত মার্চ মাসে কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি চাষের ওপর মধ্যকুল ব্লকের রাজবংশীপাড়ার ২২-২৪ জন কৃষক-কিষাণীকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
মধ্যকুল ব্লকের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথবন্ধু দাস জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা নদীর শেওলা প্রথমে স্তুপ করে রাখেন। শেওলা পচে ধাপ তৈরি হলে তার ওপর দেওয়া হয় ভার্মি কম্পোস্ট। এরপর সবজির বীজ বপণ করা হয়। প্রতিজন কৃষক ৩-৪টি বেড তৈরি করে তার ওপর সবজি চাষ করেছেন।
রাজবংশীপাড়ার গোরাচাঁদ সরকার জানান, তিনি ওই নদীতে পাঁচটি ভাসমান বেড করেছেন। তাতে লাল শাক, সবুজ শাক, গিমা কলমি, পুঁইশাক, ডাটা শাক এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) করে লাউ ও চালকুমড়ার চাষ করেছেন। কোনো রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই তিনি বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। এতে তিনি সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তার দেখে ওই পাড়ার আরো ২০-২৫ জন কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেবচন্দ্র সানা বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ ‘ভাসমান বেডে সবজি ও মশলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যাদের কৃষি জমি নেই তারা এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করলে লাভবান হবেন।