দেশে ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩৭ জন, নতুন শনাক্ত ৩,২৪০ জন

658

ঢাকা, ২০ জুন, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
গতকালের চেয়ে আজ ৮ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৪২৫ জন।
শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ কম।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৩১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ২৪০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ২৪৩ জন। দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৭৭৫।
তিনি জানান, নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ২৩ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৮ জন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৭৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৩ হাজার ৯৯৩ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৪০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কম।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নামুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৭৯টি। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৩২৭টি। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৫৪৮টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৩১টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪৫টি। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬২৮ জনকে। ছাড় পেয়েছেন ১৮৭ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৫৩৮ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৪ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৭৪ জন। দেশে কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যায় ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ২৪ ঘন্টায় সংগৃহিত হয়েছে ৩ হাজার ৯০৭টি। গত ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ৬ হাজার ৮শ’টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ১৮ হাজার ২৪৫টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৬০৫টি। বর্তমানে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪০টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭২০টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ ৪৩ হাজার ৫০৬টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৮১ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৭৫৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৫৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৪১ হাজার ৪১ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪২৯ জন এবং এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩০৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৫১ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪০ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ১৫১ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৬ জন বলে তিনি জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।