বাসস সংসদ-৬ (প্রধানমন্ত্রী) (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : অগোচরে থাকা মানুষের করোনা দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

372

বাসস সংসদ-৬ (প্রধানমন্ত্রী) (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-ভাষণ
অগোচরে থাকা মানুষের করোনা দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিরোধীদলের চিপ হুইপ জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গা করোনার কারণে প্রধানমন্ত্রী সংসদে না এসে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অধিবেশনে অংশ নিতে পারেন বলে মত দেন।
প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে করোনাভাইরাস কিংবা বুলেট কোন মৃত্যু ভয়েই তিনি ভীত নন বলে দৃপ্ত কন্ঠে সকলকে জানিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসে, গুলি খেয়ে অথবা অসুস্থ হয়ে মরি, মরতেতো একদিন হবেই। এই মৃত্যু যখন অবধারিত সেটাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ভয় পাইনি। কখনো ভয় পাবো না।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হওয়ার পর দেশে ফেরার সময়ের প্রেক্ষাপট স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমি যখন বাংলাদেশে ফিরে আসি, সেটা ছিল সেই বাংলাদেশ, যেখানে আমার মা-বাবা, ভাই, বোন, শিশু ভাইটিকে পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছিল। আমার বাবা, মাসহ পরিবারের সবাইকে মারা হয়েছিল। যারা মেরেছিল তারাই ক্ষমতায় ছিল। আমি যদি ভয় পেতাম তাহলে দেশে ফিরে আসতাম না। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারের বহু সদস্য বুলেটবিদ্ধ হয়েছিল। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী বুলেটবিদ্ধ বা স্পিপ্লন্টার নিয়ে এখনও বেঁচে আছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহ জীবন দিয়েছে, আল্লাহ নিয়ে যাবে। এটাই আমি বিশ্বাস করি। যতক্ষণ বেঁচে আছি কাজ করে যাবো। করোনার মধ্যে আমরা বাজেট দিচ্ছি। অনেকে (অনেক দেশ) বাজেট দিতে পারছে না। কিন্তু আমি বলেছি, বাজেট দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি তো বেঁচে থাকতে আসিনি। বাংলার মানুষের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে এসেছি। ভয় পাওয়ার তো কিছু নেই।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতেও দেশের জন্য এবং মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
করোনায় কাজ হারানোদের জন্য তাঁর সরকারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সবার কাজ করার সুযোগ ছিল না। যারা নিয়মিত চাকরির বেতন পান তার বাইরে কিছু লোক থাকেন, যারা ছোটখাটো কাজ এবং ব্যবসা করে খান। এই মানুষদে খবর নিয়ে তাদের ঘরে ঘরে খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের নেতাকর্মীসহ বিত্তশালী সবাই অসহায় মানুষদের সাহায্য করছে।’
তিনি উদাহারণ দিয়ে বলেন, ‘করোনায় মৃত ব্যক্তিকে অনেক পরিবারের লোক দাফন করতে সাহস পাচ্ছে না। মৃতদেহ ফেলে চলে যাচ্ছে। পুলিশ নিয়ে তাদের দাফন করছে। ছাত্রলীগের কর্মীরা দাফন করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ কর্মীরা। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
প্রয়াত সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান মোল্লা,সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক খন্দকার আসাদুজ্জামান, সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ বেগম, জাতীয় অধ্যাপক ড.আনিসুজ্জামান এবং ড.জামিলুর রেজা চৌধুরী, জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপির সহধর্মিণী বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং ’৭৫ এর ১৫ আগষ্টে গুলিবিদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগমকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তাঁদের সঙ্গে জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং গণআন্দোলনসহ দেশ মাতৃকার প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তাঁদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। সকলের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও সমবেদনা জানান তিনি।
বাসস/এএসজি-এফএন/২১৫৭/এবিএইচ