পাতকুয়া স্থাপনে লাভবান হচ্ছেন শেরপুরের হাজার-হাজার কৃষক

614

শরেপুর, ৯ জুন, ২০২০ (বাসস) : জেলার নকলা ও নালিতাবাড়ীর সংসদ সদস্য সাবকে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্ঠায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা)’র অর্থায়নে নির্মিত ডাগওয়েল’র (পাতকুয়া) সেচে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
নকলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চরমধুয়া ও চর অষ্টধর ইউনিয়নের ডেবুয়ারচর এলাকায় একটি করে এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও ১১টিসহ মোট ১৩টি পাতকুয়ার আওতায় তিনশতাধিক একর জমিতে বিনা খরচে সেচ সেবা দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়নে ওইসব পাতকুয়া স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি পাতকুয়া নির্মাণে প্রাকল্পিক ব্যয় হয় ৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা করে। সে হিসাব মতে ১৩টি পাতকুয়ায় সরকার ১২ কোটি ৭৬ হাজার ৬০০ টাকা খরচ করে। ওইসব কুয়ার সেচের আওতায় বছরে কৃষকদের প্রায় কোটি টাকা বেচে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছর পাতকুয়ার সেচের সুবিধা ভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে আগামী ৭ থেকে ৮ বছরেই সরকারের ব্যয় হওয়া সমপরিমাণ টাকার সুবিধা ভোগ করে ফেলবেন কৃষকরা।
পাতকুয়াগুলো সৌর শক্তি ধারা পরিচালিত হওয়ায় এর স্থায়িত্বকাল অনেক বেশি। তাই সুবিধা ভোগী কৃষকরা বিনা খরচে দীর্ঘদিন পাতকুয়ার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বিশেষ করে বোরো আবাদে ও শীতকালীন শাক-সবজি চাষে পাতকুয়ার সেচে কৃষকরা বেশি উপকৃত হচ্ছেন।
প্রতিটি পাতকুয়ার আওতায় ৩০টি কৃষক পরিবারের অন্তত ১৫০ জন করে উপকার ভোগী এর সুবিধা ভোগ করে লাভবান হচ্ছেন। ফলে কম-বেশি ২ হাজার উপকার ভোগী তারা পাচ্ছেন বিনামূল্যে সেচ সুবিধা।
শেরপুর বিএডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী শাহ কিবরিয়া মাহবুব তন্ময় জানান, পাতকুয়াগুলো ৫৬ ইঞ্চি ব্যস বিশিষ্ট, এটিতে ১৩০ ফুট পাইপের মাধ্যমে ৩ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর দিয়ে পানি উত্তোলন করা হয়। এতে ৪ হাজার ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ১৬ টি সোলার প্যানেল (প্রতিটি প্যানেল ২৫০ ওয়াট) ছাড়াও রয়েছে ৩ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্যাংক, যেখানে বৃষ্টির পানিও ধারণ করা হয়। বজ্রপাতের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে রয়েছে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস জানান, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে পাতকুয়া কৃষকদের বেশি উপকারে আসছে। বোরো আবাদে ও শুষ্ক মৌসুমে বা শীতকালীন শাক-সবজি চাষে এর সুবিধার মাত্রা কল্পনাতীত। তিনি বলেন, বেগম মতিয়া চৌধুরীর বিভিন্ন মহৎ উদ্যোগের মধ্যে এই ডাগওয়েল বা পাতকুয়া একটি।
বিএডিসি হিমাগারের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বেগম মতিয়া চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্ঠায় ও তার কাবিটা প্রকল্পের অর্থায়নে এবং বিএডিসি’র ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়নে এই মহতী উদ্যোগ কৃষকরা আজ লাভবান হচ্ছেন। বিনামূল্যে সেচ সুবিধা পেয়ে সুবিধাভোগী কৃষকরা বেজায় খুশি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষি বিভাগের প্রতি সুদৃষ্টি এবং সাবকে মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্ঠা, পৃষ্ঠপোষকতা ও দিকনির্দেশনাসহ বিভিন্ন দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ফলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তাগণ ও কৃষকরা।