২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত ১ হাজার ১৬৬, মারা গেছেন ২১ জন

627

ঢাকা, ২৬ মে, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৬৬ জন। বর্তমানে এ ভাইরাসে শনাক্ত ৩৬ হাজার ৭৫১ জন রোগী রয়েছে।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। দেশে এ পর্যন্ত এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫২২ জন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ২৪৫ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৮০৯ জন কম আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৭৫ জন। আজ আক্রান্তের হার ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪ হাজার ৪১৬টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ১১ হাজার ৫৪১টি। গতকালের চেয়ে আজ ৭ হাজার ১২৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৪৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫ হাজার ৪০৭টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৯ হাজার ৪৫১টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৪ হাজার ৪৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪১টি।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের ১৪ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪ জন, বরিশাল বিভাগের ২ জন রয়েছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ১১ বছর থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২০ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ১ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৮২ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪ হাজার ৭৭০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৫ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ হাজার ৩২৩ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে রয়েছে ৬ হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৩৯৯টি, ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০৬টি।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৬৮ হাজার ৩১৫ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৬৮ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ১২ হাজার ৩২৬ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৫ হাজার ৯৮৯ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭৩৭টি এবং এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২০ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৪টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪০৩টি পিপিই মজুদ রয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর পক্ষ থেকে নমুনা পরীক্ষার জন্য ৫ হাজার কীট সংগৃহিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৮টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৭৮ লাখ ১৪ হাজার ৯টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৭৩ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৯৭ হাজার ১১৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৫ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ২৪১ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১ হাজার ২০৭ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২০৪ জন এবং এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯৯২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৫ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৬৪ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ লাখ ৪ হাজার ৭৭২ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩৪২ জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৪২ হাজার ২৯ জন।
আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।