২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্ত ১,২৭৩ : মারা গেছেন ১৪ জন

598

ঢাকা, ১৭ মে, ২০২০ (বাসস) : গত ২৪ ঘন্টায় ৮ হাজার ১১৪টি নমুনা পরীক্ষায় দেশে ১ হাজার ২৭৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ২৬৮ জনে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩২৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১৪ জন। সুস্থ হয়েছেন মোট ৪ হাজার ৩৭৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৫৬ জন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
শনাক্তের হিসাবে দেশে সুস্থতার হার ১৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৭৩টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৬ হাজার ৫০১টি। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৭২টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের ৪২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ হাজার ১১৪টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৬ হাজার ৭৮২টি। আজ গতকালের চেয়ে ১ হাজার ৩৩২টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৪০৮টি।
তিনি জানান, মৃত ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, ১ জন নারী। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ৯ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন। ১৪ জনের মধ্যে শুধু হাসপাতালেই মারা গেছেন ১৩ জন এবং বাসায় ১ জন। আর অঞ্চল বিবেচনায় ঢাকা শহরে মারা গেছেন ৫, চট্টগ্রাম শহরে ৪, সাভার, কেরানীগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও শরীয়তপুরে ১ জন করে মারা গেছেন।মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৩, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৭৬ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩ হাজার ২৪৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৪ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৬০৪ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ১৩৪টি। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ৩ হাজার ১০০টি। ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যা হয়েছে ৬ হাজার ৩৪টি। এছাড়া আইসিইউ সংখ্যা রয়েছে ৩৩৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট রয়েছে ১০২টি। আইসলেশন শয্যা, আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস ইউনিট বাড়ানো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৪ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৮ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৩৫৮ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ লাখ ৯১ হাজার ৫৩১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৯ হাজার ৪১৭ জন।
সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তৎক্ষণিকভাবে এসব প্রতিষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৬৫টি। বিতরণ হয়েছে ৪৩ হাজার ৭০৬টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২২ লাখ ৫১ হাজার ৩০৪টি। বিতরণ হয়েছে ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৭৭২টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৫টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৩টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৫৮ লাখ ১২ হাজার ৪৭৩টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৯২২ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ১২৯ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ১৫৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৫১৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯৭৬ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৪১ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৯৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১৫১ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ হাজার ২০১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৮২৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৮৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৪ হাজার ৯৪০ জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ২ হাজার ৫৯ জন।
আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, রমজানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।