২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্ত ৯৩০, মারা গেছেন ১৬ জন

637

ঢাকা, ১৬ মে, ২০২০ (বাসস) : গত ২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার ৭৮২টি নমুনা পরীক্ষায় দেশে ৯৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২০ হাজার ৯৯৫ জন।
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩১৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১৬ জন। এরা সবাই পুরুষ এবং ১২ জন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ১১৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ২৩৫ জন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
গতকালের চেয়ে আজ ২৭২ জন কম আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪১ জন। যদিও আজ ঢাকার ২০টি পরীক্ষাগারের মধ্যে ৮টির ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি। আজ দেশের ৪১টি পরীক্ষাগারের মধ্যে ৩৩টির ফলাফল জানানো হয়েছে বলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৬ হাজার ৫০১টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৯ হাজার ৫৩৯টি। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকায় ১২টি ও ঢাকার বাইরের ২১টিসহ দেশের ৩৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮২টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৯৪টি।
তিনি জানান, মৃতদের মধ্যে সবাই পুরুষ। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১২, চট্টগ্রাম বিভাগের ২ এবং রংপুর বিভাগের ২ জন রয়েছেন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা শহরের ৭, ঢাকা জেলার ২ এবং গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ এবং নরসিংদীতে ১ জন করে রয়েছেন।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৪৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩ হাজার ৪৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫১ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৫৩০ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৮ হাজার ৬৩৪টি। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ২ হাজার ৯০০টি। ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যা হয়েছে ৬ হাজার ২৯টি। এছাড়া আইসিইউ সংখ্যা রয়েছে ৩২৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট রয়েছে ১০২টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৫১০ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯১৪ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৭০৪ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৭৩ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৮ হাজার ১৪১ জন। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তৎক্ষণিকভাবে এসব প্রতিষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় কোন ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ হয়নি। বিতরণ হয়েছে ১ হাজারটি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২২ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯টি। বিতরণ হয়েছে ১৮ লাখ ৭২ হাজার ৬৬টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ২৭৩টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৮২ হাজার ৩৭৭টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮০টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৮১৫ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৪০ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ১০৩ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪৩৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৮ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৬৩৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ২৫৪ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ১২৯ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৫০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৬৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৫৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৫ হাজার ৭৩ জন এবং এ পর্যন্ত ২ লাখ ৯৭ হাজার ১১৯ জন।
আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, রমজানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। তিনি বলেন, থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।