বাসস দেশ-১৭ : কাকরাইল থেকে ১৭ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

131

বাসস দেশ-১৭
জঙ্গি- গ্রেফতার,
কাকরাইল থেকে ১৭ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার
ঢাকা, ৫ মে, ২০২০ (বাসস) : রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম (সিটিটিসি) বিভাগ।
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) তৌহিদুল ইসলাম আজ দুপুরে গনমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন পাবলিক হেলথ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইলফোন, ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও ৯২২ আমেরিকান ডলার জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে হায়দার আলী (৪৪), মাহমুদুল হাসান ওরফে মাসুম, জামিরুল ইসলাম (২৪), বিল্লাল হোসেন (৩৮), শেখ আরাফাত ওরফে জনি (৪৮), ইমরুল হাসান ওরফে ইমন (২৫), সাইফুল ইসলাম (২৫), মোজাম্মেল হক (৩৩), শাহজালাল (৩৪), আক্তারুজ্জামান (৩০), মাহমুদুল হাসান ওরফে সাব্বির (২৩), আবিদ উল মাহমুদ ওরফে আবিদ (২২), সোহাইল সরদার (৩৩), ওবায়দুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩০), মাহমুদ হাসান ওরফে শরীফ (১৮), মাজেদুল ইসলাম ওরফে মুকুল (২৮) ও সোহাগ হাসান (২০)।
তৌহিদুল ইসলাম গনমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জেএমবির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান নামে একজন বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে সৌদি আরবে যান এবং এখনো তিনি সেখানে অবস্থান করছেন।
তিনি বিভিন্ন সময় জিহাদের পক্ষে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন বক্তব্য এবং মুসলিমদের পক্ষে গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে জিহাদ করার আহ্বান জানিয়ে অডিও-ভিডিও প্রকাশ করেন। তাবলিগের নামে সৌদিআরব গিয়ে কথিত ইমাম মাহাদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আশায় ‘হিজরতে’জন্য তারা রওনা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল বলে জানান তিনি।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জনৈক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে সৌদি আরবে যান এবং এখনও সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি নিজেকে ইমাম মাহদির সৈনিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে মুসলিমদের পক্ষে জিহাদ করার আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু অডিও-ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। গ্রেফতাররা তার বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইমাম মাহদির সৈনিক হিসেবে যুদ্ধের প্রস্তুতিস্বরূপ সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করেন।’
সিটিটিসি কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে বলেন, তারা একমাস আগে তাবলিগের নামে কথিত ‘হিজরত’ করে। তারা জঙ্গি কার্যক্রম চারাতে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। সৌদি আরবে গিয়ে তারা কথিত ‘ইমাম মাহাদির সৈনিক’ হিসেবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে চাচ্ছিলো। তাদের বলা হয়েছিল, করোনার দুর্যোগে আকাশ থেকে এক ধরনের গজব নেমে আসবে এবং সবকিছু ধোঁয়াছন্ন হয়ে যাবে। তখন সীমান্তের কোনও পাহারা থাকবে না। এই সময় তারা যেন চলে আসে।
গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাবলিগ জামাতের আড়ালে সাতক্ষীরা বা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা ভারত-কাশ্মীর সীমান্ত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাতে চেয়েছিলেন।
গত ১৮ মার্চ থেকে তারা প্রথমে সাতক্ষীরা ও পরে যশোর সীমান্তের কাছে বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করেন ভারতে যাওয়ার জন্য। তারা সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে পার হতে না পেরে ঢাকা হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে মোতাবেক তারা বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসেন।
এডিসি তৌহিদুল ইসলাম গনমাধ্যমকে আরও বলেন, ‘সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের প্ররোচনায় এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্র গত জানুয়ারি মাসে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি গমন করে আর ফিরে আসেননি।
এছাড়া বিভিন্ন সময় সাদ, কাউসার, শরীফ, তোফাজ্জল, গিয়াসউদ্দিন, আলী আজম এবং রাশেদ নামে আরও সাতজন ইমাম মাহাদির সৈনিক হিসেবে যোগদানের উদ্দেশ্যে সৈাদি আরব হিজরত করেছেন বলে গ্রেফতারকৃতরা জানান।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।
বাসস/সংবাদদাতা/কেসি/১৮২২/এবিএইচ