দেশে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১০৬৩, মারা গেছেন ১৭৭ জন

862

ঢাকা, ৩ মে, ২০২০ (বাসস) : দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ১০৬৩ জন এবং মারা গেছেন ১৭৭ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৬৬৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এটি এ যাবৎকালে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যা। বর্তমানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৯ হাজার ৪৫৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় ২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৭৭ জন। এদের ২ জনই ঢাকার বাইরের, একজন রংপুরের, অন্যজন নারায়ণগঞ্জের।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
গতকালের চেয়ে আজ আক্রান্ত ১১৩ জন বেশি। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫৫২ জন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৫ হাজার ২১৪টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৬ হাজার ১৯৩টি। নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের তুলনায় ৯৭৯টি কম। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫ হাজার ৩৬৮টি। আগের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ৫ হাজার ৮২৭টি। গতকালের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা ৪৫৯ টি কম। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪১ হাজার ৪৩৪টি।’
তিনি বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির তৈরি করা গাইড লাইন অনুসারে, এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৩ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের মধ্যে ৬২৪ জন। ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগীয় শহরে সুস্থ হয়েছেন ৪৩৯ জন ।
নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘মহানগরীর হাসপাতালগুলো বাদে ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলো থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৭২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালগুলো থেকে ৭২ জন, রাজশাহী থেকে ২ জন, খুলনা থেকে ৬ জন, বরিশাল থেকে ২৯ জন, সিলেট থেকে ২ জন, ময়মনসিংহ থেকে ৩১ জন এবং রংপুর বিভাগের হাসপাতালগুলো থেকে ২৫ জন সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন।
ঢাকা মহানগরীর চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে ২৯৮ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ২১৩ জন, ইনফেকশাস ডিজিজ হাসপাতাল থেকে ৮ জন, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল থেকে ৩৮ জন, রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে ১৫ জন, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল থেকে ২২ জন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতাল থেকে ২৬ জন এবং মিরপুর লাল কুঠির হাসপাতাল থেকে ৪ জন সুস্থ হয়েছেন।’
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৫ জনকে, এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১ হাজার ৬৩৭ জনকে। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬০ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৮২ জন।
তিনি জানান, সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৭৩৮টি। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ৩ হাজার ৯৪৪টি। ঢাকা সিটির বাহিরে শয্যা রয়েছে ৫ হাজার ৬৯৪টি। আর দেশে আইসিইউ সংখ্যা রয়েছে ৩৪৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট রয়েছে ১০২টি।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৯ হাজার ৮৭৪ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ১৪৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৯২ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৭ হাজার ৭৩৯ জন।
সারাদেশের ৬৪ জেলা এবং সেখানকার উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেবা দেয়া যাবে বলে তিনি জানান।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭০টি। বিতরণ হয়েছে ৩৩ হাজার ৪২৫টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ১৬২টি। বিতরণ হয়েছে ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১৫৩টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৯টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ৭০ হাজার ২২১টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৩৯ লাখ ৫ হাজার ৬১২টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ও ওয়েবসাইটে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ হাজার ৮ জন এবং এ পর্যন্ত ১৬ লাখ ৫৭ হাজার ২৭২ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫৮৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গত ২৪ ঘন্টায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আরও ১৭ জন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২৮ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫৬৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৭৮ হাজার ২৮০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।