শিমুলিয়ায়-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে যান চলাচল শুরু

170

মুন্সীগঞ্জ, ১৭ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : প্রমত্তা পদ্মা এখন প্রবল স্রোত। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উত্তাল পদ্মা। সেই সাথে বড় বড় ঢেউ। এসব কারণে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে অবস্থা কিছুটা সহনীয় হওয়ায় ২৪ ঘন্টা পর মঙ্গলবার সকাল থেকে লঞ্চ ও সিবোট চলাচল শুরু হয়েছে। ফেরি ৭টির স্থলে এখন চলছে ১৪টি। মাওয়ায় প্রান্তে ৫শ’ ট্রাক পরাপারে অপেক্ষায় রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র এজিএম খন্দকার শাহ মো. খালেদ দুপুরে জানান, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে সোমবার সকাল থেকে লঞ্চ, সিবোটসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ¯্রােতের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় ফেরি চলাচলও সীমিত করা হয়েছিল। বহরের ১৬টি ফেরির মধ্যে কোনক্রমে চলতে পারছে মাত্র ৭টি ফেরি। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে চলছে ১৪টি। তাও ধীরে ধীরে। তাই পরাপারে সময় লাগছে বেশি। তাই ঘাটে দেখা দিয়েছে যানজট। পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে পাঁচ শতাধিক ট্রাক যান। তবে যাত্রীবাহী যানগুলোকে আগে পরাপার করা হচ্ছে।
কয়েকদিন ধরে পদ্মায় প্রচন্ড ঢেউ আর স্রোতের কারণে ফেরি চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল। ফেরিগুলো স্রোতের প্রতিকূলে পদ্মার লৌহজং টানিং পয়েন্ট পারি দিতে পারছিল না। পদ্মা পারি দিতে না পারায় বার বার ফেরিগুলো ফিরে আসছি একই ঘাটে। পরিস্থিতি নিরসনে গত কয়েকদিন আগে একটি নতুন বিকল্প চ্যানেল চালু করা হয়। এ চ্যানেলে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আটকে পড়া ট্রাকগুলো পারপার করা হচ্ছিল।
কিন্তু ট্রাকের সংখ্যা কমতে না কমতে গত বুধবার থেকে আবার দেখা দেয় নতুন করে সমস্যা। উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নতুন চ্যানেলেও প্রবল স্রোত দেখা দিয়েছে।
ঘাট সূত্র আরও জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি বঙ্গপোসাগরে যাচ্ছে পদ্মা নদী দিয়ে। তাই এ নৌপথে এখন প্রচুর স্রোত। এ স্রোত ঠেলে যেতে হচ্ছে বলে ফেরিগুলো গতি তুলতে পারছেনা স্রোতের প্রতিকুলে। লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাট থেকে মাদারীপুর শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে যেতে যেখানে এক ঘন্টা সময় লাগত, সেখানে এখন দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগছে। এ দিকে লঞ্চ ও সিবোট বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভিড় পড়েছে ফেরিতে। ফলে ঘাট এলাকায় পারাপারে অপেক্ষায় আছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এ পথে যাতায়াতকারী যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকদের দুর্ভোগ এখন চরমে উঠেছে।
সরেজমিনে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পার্কিং ইয়ার্ড ও মহাসড়কের পাশে অসংখ্য যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন অফিসার আহম্মদ আলী জানান, রোববার দিবাগত রাত ৮টা থেকে সবগুলো ডাম্প বা টানা ফেরি বন্ধ ছিল। তবে মঙ্গলবার থেকে চালু করা হয়েছে।
মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আরমান হোসেন ও বিআইডব্লিউটিএ’র শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর মো. সোলাইমান হোসেন জানায়, পদ্মায় প্রবল ¯্রােত আর ঢেউ। তাই এ রুটের ৮৭ টি লঞ্চ ও উভয় পারের ৩ শতাধিক সিবোট চলাচল ১৪ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার চালু হয়েছে। তাই যাত্রীদের চাপ কমেছে। কিন্তু ট্রাকের লাইন দীর্ঘ রয়েছে।