নাটোর ও ফেনীতে ধানের যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি পেলেন কৃষকরা

412

ঢাকা, ২২এপ্রিল, ২০২০ (বাসস ডেস্ক) : সরকারের কৃষিতে যন্ত্রপাতি উন্নয়ন সহায়তা, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সেলের আওতায় নাটোর ও ফেনীতে ধানের যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি পেলেন কৃষকরা।
বাাসসের নাটোর সংবাদদাতা জানান, জেলায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ভর্তূকি মূল্যে ধান কাটা ও মাড়াই কার্যক্রমের জন্যে ১৭টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার দুপুরে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেষ কম্বাইন্ড হারভেস্টরটি কৃষকের হাতে তুলে দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস।
উপজেলার বনপাড়ার পৌরসভার মালিপাড়া এলাকার কৃষক মিজানুর রহমানের হাতে হারভেস্টরের চাবি হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ, উপজেলা কৃসি অফিসার ইকবাল আহমেদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজি।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি যন্ত্রপাতি উন্নয়ন সহায়তা, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সেল এর আওতায় চলতি বোরো মৌসুমে জেলার কৃষকদের জন্যে ভর্তূকি মূল্যে মোট ১৭টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিন বরাদ্দ করা হয়। ২৯ লাখ টাকা মূল্যমানের এসব মেশিন ১৪ লাখ টাকা ভর্তূকি মূল্যে সাতটি উপজেলার কৃষক পর্যায়ে বরাদ্দ দে’য়া হয়। এরআগে নাটোর সদর উপজেলায় চারটিসহ অন্যান্য উপজেলায় বিতরণ কাজ সম্পন্ন হয়।
বাসসের ফেনী সাংবাদদাতা জানান, একই কর্মসূচির আওতায় ফেনী সদর উপজেলার ২ কৃষককে কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয়েছে। যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ১টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার। আজ সকালে সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানাসহ কৃষি কর্মকর্তারা তাদের হাতে এসব বুঝিয়ে দেন।
এতে কাজীরবাগের কৃষক আব্দুল হাই চৌধুরী ১টি রিপার যন্ত্র ও ফাজিলপুরে কৃষক ওমর ফারুক কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার পেয়েছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ধানকর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই করার জন্য সরকারের ভর্তুকিতে দুই কৃষককে এসব যন্ত্র প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার যন্ত্রের বাজার মূল্য ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এতে সরকার ভর্তূকি দিচ্ছে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর কৃষক দিয়েছেন ১৬ লাখ টাকা। রিপারবাজার মূল্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, সরকার ভর্তূকি দিচ্ছে ৯০ হাজার টাকা।
কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপকারিতা প্রসঙ্গে কৃষি প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন খান বলেন, প্রতি একর কৃষিজমিতে ধান কেটে ঘরে আনতে ১৭ জন শ্রমিকের প্রয়োজন। হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে মাত্র দুই ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া এবং বস্তাবন্দী করা সম্ভব। আর রিপার দিয়ে ১ ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটা সম্ভব। এরফলে কৃষকের সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। কৃষক কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবে।
উপকারভোগী কৃষক আবদুল হাই চৌধুরী বলেন, আমি রিপার মেশিন নিয়েছি। এ যন্ত্র দিয়ে নিজের জমির পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের ধান কাটা যাবে। যেখানে একজন কৃষকের ১০০ শতক জমির ধান কাটতে খরচ হতো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, সেখানে মেশিনের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকায় ১ একর জমির ধান কাটা যাবে। তিনি বলেন, সরকারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বাড়তি আয় পাবো।
কৃষক ওমর ফারুক বলেন, এ মেশিনের সাহায্যে অতিঅল্পসময়ে ধান ঘরে তোলা সম্ভব। জনবলের জন্য অনেক সময় ফসল ঘরে তুলতে দেরী হয়। অধিক খরচের কারণে লাভ কমে যায়, অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতিও হয়। উন্নত যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কৃষি লাভজনক ব্যবসা হবে।