করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ২৬৬

683

ঢাকা, ১৭ এপ্রিল, ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ১৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এটি একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় আরও ২৬৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৮৩৮ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সম্পর্কে নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে বাসা থেকে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ সময় অধিদপ্তর থেকে যুক্ত হন। এ সময় নিজ বাসা থেকে যুক্ত হয়ে রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের পরিচালক ড. হাবিবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘করোনা শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৯০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে আরও ২৬৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ১ হাজার ৮৩৮ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৫ জন। এতে মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৭৫। আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৮ জন।’
তিনি বলেন,‘এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত ১ হাজার ৮৩৮ জনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন প্রায় ৫০০ জন। অর্থাৎ, হাসপাতালে সেবা নিয়েছেন শতকরা ৩৩ ভাগ রোগী, বাকি ৬৭ শতাংশ হোম বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টেনে আছেন। সারাদেশে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সাপোর্ট নিয়েছেন ২৭ জন। অর্থাৎ প্রায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ রোগী আইসিইউ সাপোর্ট নিয়েছেন। এই হারে ১০ হাজার রোগী যদি আইসিইউ সার্পোট নেয় তাহলে ১৮০টি ভেন্টিলেটর সার্পোট লাগবে। এই সার্পোট একবারে লাগে না, এরপরও যদি দরকার হয় তাহলে এই সময়ের মধ্যে দেশের প্রতিটি হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবস্থা রয়েছে যা করোনাভাইরাসের রোগীর জন্য বেশি প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের কোনও চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। অন্যদের অক্সিজেনসহ কিছু ওষুধ লাগতে পারে। আইসিইউ, ভেন্টিলেটর এবং প্রস্তুুতি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। এই ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রতিনিয়ত কাজ চলছে।’
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘হাসপাতালে যারা ভর্তি হয়েছেন তাদের সবার ক্ষেত্রে ভর্তি প্রয়োজন ছিল না। সামাজিক চাপের কারণে তাদের বাড়িতে না রেখে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনেও বলা আছে, কেউ চাইলে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিতে পারেন, এতে হাসপাতালের ওপর চাপ কম পড়বে।’
তিনি বলেন, আক্রান্ত শনাক্তদের মধ্যে বয়স বিভাজনের ক্ষেত্রে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২১ ভাগ। এরপরে রয়েছে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৯ ভাগ। আর ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৫ ভাগ। আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ৬৮ ভাগ পুরুষ।
পরিচালক জানান, ‘আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ৪৬ ভাগ ঢাকার। এরপর নারায়ণগঞ্জে ২০ ভাগ এবং তার পরে গাজীপুরেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছে। এরপর চট্টগ্রাম ও মুন্সীগঞ্জেও রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মিরপুরে।
তিনি বলেন, ‘আমরা টোলারবাগে বেশি আক্রান্ত দেখেছিলাম। এখন মিরপুরের বিভিন্ন অঞ্চল এবং টোলারবাগের পুরোটা এলাকা ধরে যদি আমরা বলি, এটা শতকরা প্রায় ১১ ভাগ। এরপরে রয়েছে মোহাম্মদপুর এলাকা। সেখানে শতকরা ৪ ভাগ। ওয়ারী এবং যাত্রাবাড়ী এ সমস্ত জায়গায় শতকরা ৪ ভাগ, উত্তরায় শতকরা ৩ ভাগ ও ধানমন্ডিতে শতকরা ৩ ভাগ সংক্রমিত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে।