মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর আইনের খসড়া অনুমোদন

329

ঢাকা, ১৬ মার্চ ২০২০ (বাসস): বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর আইন ( নিবন্ধন ও পরিচালনা) ২০২০’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সকালে তাঁর কার্যালয়ে (পিএমও) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন প্রদান করা হয়। অপরাহ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি বলেন, ট্যুর অপারেটরদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশে প্রচলিত কোন আইন না থাকায় অনেক সময় পর্যটকগণ তাঁদের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। ‘কাজেই,বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে সুপরিকল্পিত ট্যুর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড এর কার্যক্রম আইনের আওতায় পরিচালনা এবং পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর (নিবন্ধন ও পরিচালনা) আইনটি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
খন্দকার আনোয়ার বলেন, এখানে ট্যুর অপারটের এবং ট্যুর গাইড কারা হবেন এবং কোন যোগ্যতায় কারা কতদিন মেয়াদের জন্য নিবন্ধন পাবেন এবং কি জন্য তা বাতিল হবে তা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নিবন্ধন ছাড়া কেউ ট্যুর অপারেটর বা ট্যুর গাইড হতে পারবেন না। মৃত্যুবরণ বা শারিরীক অক্ষমতার কারণে নিবন্ধন সনদ হস্তান্তর এবং কার্যালয় স্থানান্তরের বিধান রয়েছে। এছাড়া, আইন অমান্যকারীর জন্য ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ অনুযায়ী বিচারের বিধান রাখা হয়েছে,বলেন তিনি। সচিব বলেন, এই আইনটি প্রণীত হলে বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে ট্যুর অপারেটরদের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ট্যুর অপারেটরগণ সংবিধিবদ্ধ আইনের আওতায় কাজ করবে, পর্যটকদের কাঙ্খিত সেবা প্রাপ্তি সহজতর হবে, পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় ও বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া এদিন বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস আইন-২০২০ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদনও দেয় মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রি পরিষদ সচিব বলেন, ‘আইনটি পাশ হলে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মূল উপাত্ত,সরকারি, বেসরকারি/স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক,সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,ঐতিহাসিক গুরত্ব সম্পন্ন দলিল দস্তাবেজ,গেজেট,গেজেটিয়ার,নকশা,আলোকচিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল সামগ্রি,সাংস্কৃকি গুরুত্বসম্পন্ন মূল্যবান পান্ডুলিপি,মানচিত্র,পত্রিকা,চিঠি,প্রতিবেদন, নিবন্ধনবই, গুরত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস সহ নথিপত্র সংরক্ষণের কাজ সুষ্ঠুভবে সম্পাদন এবং পাঠক ও গবেষকদেও তথ্যসেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।’ মূলত, যে লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে জাতীয় আর্কাইভস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল,বলেন তিনি।
সচিব বলেন, এটি আগে ১৯৮৩ সালে জারিকৃত একটি অর্ডন্যান্স দ্বারা চললেও হাইকোর্টের আইন অনুযায়ী নতুন করে আইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়াতেই বাংলাদেশ আর্কাইভস আইন ২০২০’র নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিব বলেন, নতুন আইনে ২৭টি ধারা রয়েছে যারমধ্যে ৭টি ধারা নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে।
যারমধ্যে রয়েছে-১. আইনের প্রাধান্য (অন্য আইনের ওপর এই আইনটি প্রধান্য পাবে। ধারা-৩)
২. আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও উহার মহাপরিচালক(পূর্বের সর্বোচ্চ পদ পরিচালক থেকে এখন মহাপরিচালক পদে উন্নীত করা হয়েছে,ধারা-৮)
৩. জাতীয় আর্কাইভস’র দাপ্তরিক কার্যে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার (ধারা-১৩)
৪. আর্কাইভস বিষয়ে কোর্স পরিচালনার ক্ষমতা (ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর জন্য কোর্স পরিচালনার বিধান, ধারা-২১)
৫.অধিদপ্তরের কর্মচারি (ধারা-২২)
৬. রহিতকরণ ও হেফাজত ( একটি পরিষদ থাকবে যারা সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী বডি হিসেবে কাজ করবে, ধারা-২৬)। এবং
৭. ইংরেজী অনূদিত পাঠ প্রকাশ (ধারা-২৭)।
খন্দোকার আনোয়ার বলেন, নতুন আইনে মন্ত্রিপরিষদ একটি সংশোধনী নিয়ে এসেছে। সেখানে মহাপরিচালকের কাছে আগে একটি ক্ষমতা ছিল যে, মহাপরিচালক মনে করলে যেকোন রেকর্ড ডেষ্ট্রয় করতে পারতেন। সেই ক্ষমতাটা আর থাকবেনা। তাঁদের কাজ হচ্ছে কেবল সংরক্ষণ করা।
সচিব বলেন, অপরাধ সংক্রান্ত ২৪ নং ধারায় বলা হয়েছে-কোন ব্যক্তির জ্ঞাতসারে আর্কাইভসে রক্ষিত কোন রেকর্ড বা নথিপত্র দলিল দস্তাবেজ বা পান্ডুলিপি বিকৃত করেন বা নষ্ট করেন তবে তাঁকে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হবে।