প্রবাসীদের আগমন ঠেকাতে ফ্লাইট বাতিল করেছে ঢাকা : মোমেন

610

ঢাকা, ১৫ মার্চ, ২০২০ (বাসস): পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রোববার বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ঢাকা বৈদেশিক ফ্লাইট বিশেষত ইউরোপীয় দেশগুলার ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। সরকারের পরামর্শ উপেক্ষা করে ওই সব দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশীরা বাংলাদেশে আসতে থাকায় বাধ্য হয়ে সরকার এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস)-এ আয়োজিত এক সেমিনারে যোগদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা যা দেখেছি তা হলো, ভাইরাসটি বাইরে থেকে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে। মাত্র কয়েকজনের (প্রবাসী) জন্য আমরা ১৬ কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে মোড় নেয়, তবে তা মোকাবেলা করার মতো পর্র্যাপ্ত সামর্থ ও সরঞ্জামাদি আমাদের নেই। জনগণকে রক্ষা করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।’ মোমেন বলেন, এর আগে, পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে না আসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল। ‘কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেননি। তাই আমরাও বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট বাতিলের সিন্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’ শনিবার কিছু প্রবাসী বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে না চাওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী তাদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গতরাতে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং যে সব দেশ ইতোমধ্যেই তাদের দেশে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে সে সব দেশের সাথে ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩১ মার্চ মধ্যরাত থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে। শনিবার নতুন করে দু’জনের দেহে করোনা ভাইসারের অস্তিত্ব পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, শুধুমাত্র যারা গত ২৮ দিনে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে- এমন দেশে সফর করেনি, তারাই যুক্তরাজ্য থেকে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে আসতে পারবেন।’ তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপকে করোনা ভাইরাসের সিওভিআইড-১৯ এর নতুন কেন্দ্রস্থল ঘোষণা করেছে। আর এ জন্যই সরকার তার নাগরিকদের এই মহামারির প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত, সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতারের মতো যে সব দেশে ইতোমধ্যেই তাদের সীমান্ত কড়াকড়ি আরোপ বা বন্ধ করে দিয়েছে তাদের সঙ্গেও এই দুই সপ্তাহব্যাপী ফ্লাইট স্থগিত করা হবে। পাশাপাশি, এই সময়ের মধ্যে সব দেশের জন্যই অন-অ্যারাইভেল ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকবে।
এছাড়া, করোনায় আক্রান্ত দেশ থেকে আগতদের অবশ্যই নিজস্ব-কুয়ান্টাইনে থাকতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন ইতালি ও একজন জার্মানী ফেরত। অপর জন প্রবাসীদের সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেয়া হবে।