বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যুগযুগ ধরে বিশ্ববাসীকে উজ্জীবিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

431

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-৭ মার্চ-আলোচনা
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যুগযুগ ধরে বিশ্ববাসীকে উজ্জীবিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

অনুষ্ঠানে সমবেত সকলকে প্রধানমন্ত্রী ‘তাঁর সরকার মুজিবর্ষে সকলের জন্য একটি বাসগৃহের ব্যবস্থা করতে পারবে কি না’, এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে সকলে সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দেন। তখন প্রধানমন্ত্রী তাঁর এই কথাটি সারাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দলের সকল নেতা-কর্মীকে নির্দেশ দেন।
‘আমি যে কথা বললাম, সে কথা মেনে নিয়ে আশা করবো আপনারা সকলেই উদ্যোগ নেবেন,’ বলেন তিনি।
জাতির পিতার উদ্যোগে করা গুচ্ছগ্রামের অনুকরণে তাঁর সরকারের গৃহহীনদের পুণর্বাসনে গৃহীত ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্প এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর’ করে দেওয়ার প্রকল্পেরও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের আওয়ামী লীগের একটা সৌভাগ্য আমরা ক্ষমতায় থেকে স্বাধীনতার রজত জযন্তী উদযাপন করেছি আর আজকে জনগণের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি ।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা উদযাপন করবো। এজন্য বাঙালির কাছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, তাঁরা সে সুযোগটা আমাদের দিয়েছেন।
ইতিহাস বিকৃত করে ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর নাম ও অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল, স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাংলাদেশে এমন একটা সময় ছিল আমাদের বাংলা ভাষা দাবি আদায়ের যে আন্দোলন সেখানে যে তাঁর অবদান ছিল সেটা মুছে ফেলা হয়েছিল। একেবারে অস্বীকার করেছিল।’
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তির সংগ্রামে যে তার অবদান সেটাও মুছে ফেলা হয়েছিল। স্বাধীনতার ঘোষক যাকে সাজানো হয়েছে, সে সরকারের ৪শ টাকা বেতনের কর্মচারি ছিল। কোথাকার কোন মেজর এসে বাঁশিতে ফুঁ দিল আর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেল, এটা কি কখনও সম্ভব?
শেখ হাসিনা বলেন, আসলে সত্যকে কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আর জাতির পিতা তো তার ৭ মার্চের ভাষণে বলেই গেছেন যে ‘৭ কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ কোন কিছু দাবায়ে রাখা যায় না। সত্য উদ্ভাসিত হবেই। সত্য ঠিকই উঠে আসবে। আজকে সে সত্যটা মানুষের কাছে পরিস্কার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মুজিব সৈনিকদের ওপর অনেক অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, কিন্তু তাঁরা থেমে থাকেনি। মুজিব আদর্শ বুকে ধারণ করে এগিয়ে গেছে এবং তাঁরা এগিয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই ৭ মার্চের ভাষণ, যে ভাষণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল। এখন তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামণ্য দলিলে স্থান করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ আড়াই হাজার বছরের যত ভাষণ, যত সামরিক অসামরিক নেতারা দিয়েছেন তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ। যে ভাষণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে স্বাধীনতার চেতনায়। এই ভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এই ভাষণ পেয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন আমার মা।’
‘মা বলেছিলেন, এ দেশের মানুষের মন তুমি বোঝ। তোমার মনে যা আসবে তুমি তাই বলবে’, যোগ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
‘জিয়া-এরশাদ-খালেদা সবাই ৭ মার্চের ভাষণ বাজানোর জন্য বাধা দিয়েছেন, বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যারা এই ভাষণ মুছে ফেলতে চেয়েছিল, নিষিদ্ধ করে রেখেছিল আমি জানি না তারা আজ লজ্জা পায় কি না। অবশ্য তাদের লাজ-লজ্জা আছে বলেও মনে হয় না। যে ভাষণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আজকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সে ভাষণ স্বীকৃতি পেয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল ৭ মার্চের ভাষণ। এই ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সারাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে মুক্তিযুদ্ধ করে তারা দেশটাকে স্বাধীন করেছেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী ৯ মাসে সবসময়ই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ চলত। মুক্তিযোদ্ধারা এ ভাষণ শুনতেন, তারা যুদ্ধের অনুপ্রেরণা নিতেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যত বাধা এসেছে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐ বাধা অতিক্রম করে এই ভাষণ বাজিয়েছে, মানুষ ভাষণ শুনেছে।’
তিনি এজন্য আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা অনেক প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও ২১ বছর এ ভাষণ বাজিয়েছেন। যারা শুনেছেন তারাই বুঝেছেন কী অমূল্যসম্পদ এই ভাষণ।’
বাসস/এএসজি-এফএন/২১১৪/আরজি