নবীনগরের খারঘর গণকবরে নির্মিত হল স্মৃতিস্তম্ভ

394

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৯ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর সংরক্ষণ করা হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের খারঘর গণকবর। ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর খারঘর গ্রামে নির্বিচারে গণহত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। সেদিন ওই গ্রামের ৪৩ জনকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ২৩ জনকে খারঘর গ্রামেই গণকবর দেয়া হয়। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও সংরক্ষণ করা হয়নি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ গণকবরটি। দীর্ঘদিন ধরেই গণকবরটি সংরক্ষণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীরা। অবশেষে গণকবরটি সংরক্ষণ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ ও জেলা পুলিশের উদ্যোগে খারঘর গ্রামে নির্মিত হয়েছে ‘খারঘর গণকবর স্মৃতিসৌধ-৭১’।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর প্রায় ১২টার দিকে স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নে পাগলা নদীর তীরবর্তী খারঘর গ্রাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর, আশুগঞ্জ, ভৈরব ও নবীনগর উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় মুক্তিযুদ্ধে এ অঞ্চলটিতে হানাদারদের আক্রমণের ভয় খুব একটা ছিল না। মুক্তিযোদ্ধারা এখানে অবস্থান নিয়ে কয়েকটি অপারেশন চালায় নবীনগর, আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বিষয়টি এক পর্যায়ে জেনে যায় পাকিস্থানী হানাদাররা। ১৯৭১ সালে ১০ অক্টোবর বরবর পাকিস্তানী বাহিনী নদী পথে জাহাজে এসে এলোপাথাড়ি আক্রমণ করে। এ সময় হত্যা করে ৪৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে। তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে আহত হয় ১২৭জন। নিহতদের একই সাথে গণকবর দেওয়া হয় ওই স্থানটিতে। এরপর থেকে প্রতি বছর ১০ অক্টোবর খারঘর গণহত্যা দিবস পালিত হয়ে আসছে।