মধুপুরে কলাগাছের বাকল ও আনারসের পাতায় তৈরি পণ্য

337

টাঙ্গাইল, ২৬ ফেব্রুয়ারি,২০২০(বাসস): জেলার মধুপুরে ফেলে দেয়া কলাগাছের বাকল ও আনারসের পাতায় গ্রামের দরিদ্র নারীরা তৈরি করছেন, টিসুবক্স, কলমদানী, জুয়েলারী বক্স, ওয়ালম্যাট, ব্যাগসহ হরেক রকমের সৌখিন পণ্য সামগ্রী। স্থানীয় এক নারী উদ্যোক্তা দরিদ্র এসব নারীদের নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছেন দক্ষ কর্মীতে। এরফলে তৈরী হয়েছে দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের। এখানে উৎপাদিত এসব পণ্য দেশের সীমানা পেরিয়ে চলে যাচ্ছে উন্নত দেশগুলোতে।
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাহাড়ী অঞ্চল। এখানকার অধিকাংশ নারীই গৃহিনী। গৃহস্থালী কাজ করেই তাদের সময় কাটে। তারা স্বামী-সন্তানের আয়ের উপরই নির্ভরশীল। এসব নারীদের স্বাবলম্বী করতে তুলতে কাজ করছেন রাহেলা জাকির নামের একজন নারী উদ্যোক্তা। তিনি মধুপুরের বনাঞ্চল জাঙ্গালিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত করেছেন হস্তশিল্পের কারখানায়। তার এ কারখানায় কাজ করছেন প্রায় এক’শ নারী। এসব নারীদের তিনি দিয়েছেন হস্তশিল্প তৈরীর প্রশিক্ষণ। এ কারখানায় ফেলে দেয়া কলা গাছ আর আনারসের পাতা দিয়ে নারীরা তৈরী করছেন টিসুবক্স, কলমদানী, জুয়েলারী বক্স, ওয়ালম্যাট, ব্যাগ, চাবির রিংসহ নিত্য প্রয়েজনীয় হরেক রকমের সৌখিন পণ্য।
জানা যায়, আনারসের রাজধানী খ্যাত মধুপুরে বিগত ২০১৭ সালে এ হস্তশিল্পের কারাখানার পথচলা শুরু। এ অঞ্চলে আনারসের পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে কলার আবাদ হয়ে থাকে। প্রথমে ফেলে দেয়া কলাগাছ আর আনারসের পাতা সংগ্রহ করা হয়। এরপর তা মেশিনের মাধম্যে প্রক্রিয়াজাত করে এক ধরনের সুতা তৈরী করেন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা। এ সুতা দিয়ে গ্রামের দরিদ্র মহিলারা তৈরী করছেন নিত্য প্রয়োজনীয় সৌখিন পণ্য সামগ্রী। গ্রামের এসব নারীদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরী করা আকর্ষণীয় এসব পণ্য যাচ্ছে চীনসহ উন্নত দেশগুলোতে। এখানে কর্মরত নারীদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে । শুরুতে কাজটি কঠিন মনে হলেও এখন অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের এখানে কাজের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। এতে স্থানীয় অন্য নারীরাও কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এর ফলে এ অঞ্চলের নারীদের জন্য তৈরী হয়েছে কর্মসংস্থানের। এখানে কাজ করে তারা হচ্ছেন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।
দরিদ্র নারীদের আত্বনির্ভশীল করে গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য বলে জানালেন নারী উদ্যোক্তা রাহেলা জাকির। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক কাঁচামাল দিয়ে তৈরি এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বহিঃবিশ্বে। এ শিল্পের সম্প্রসারণ করা গেলে দরিদ্র নারীদের যেমন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, তেমনই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভ’ুমিকা।
টাঙ্গাইল জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজনীন সুলতানা জানান, এটিকে একটি সম্ভাবনাময় শিল্প বলে মনে করছেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। এ শিল্পের প্রসার ও উৎপাদিত পণ্যের বাজার তৈরীতে কাজ করছেন তারা।