৬০১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো প্রকল্প অনুমোদন

1016

ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোসহ ৯ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৩ হাজার ৬৩৯ কোটি এক লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ৮ হাজার ৮৮৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারি সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় হবে ২৯৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি জানান, একনেকে অনুমোদিত ৯ প্রকল্পের সবগুলোই নতুন প্রকল্প। মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো প্রকল্পের খরচ হবে ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হিসেবে ভারতীয় ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে অধিক সংখ্যক জাহাজ বার্দিংয়ের মাধ্যমে কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে এবং নতুন নতুন পণ্য আমদানি রপ্তানির দ্বার উন্মোচন হবে। এর পাশাপাশি ভারত, নেপাল ও ভুটানে ট্রানজিট সুবিধা চালু হলে বন্দর ব্যবহারের ব্যাপক চাহিদাও সৃষ্টি হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরে অতিরিক্ত ১৫ মিলিয়ন টন কার্গো ও ৪ লাখ টিইইউ কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করা সম্ভব হবে।
প্রকল্পের আওতায় সব ধরনের সুবিধাসহ ১ নম্বর জেটি এবং ২ নম্বর কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মিত হবে। সব ধরনের সুবিধা সম্বলিত কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড ও কন্টেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ হবে। এছাড়া সিকিউরিটি সিস্টেম, রাস্তা, ইয়ার্ড, শেড, নিরাপত্তা প্রাচীর, অটোমেশন ও অন্যান্য অবকাঠামোসহ বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা স¤প্রসারণ করা হবে।
এর পাশাপাশি সকল সুবিধাসহ সার্ভিস ভেসেল জেটি, শেড, এমপিএ টাওয়ার, পোর্ট রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্স, মেকানিক্যাল ওয়ার্কসপ, সরঞ্জাম ইয়ার্ড, সরঞ্জাম শেড এবং সকল যন্ত্রপাতিসহ পুল নির্মাণ করা হবে।
জানুয়ারি ২০২০ থেকে জুন ২০২৪ সাল মেয়াদে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেখানে ব্রীজ নির্মাণ করা হবে, সেখানে যেন আপদকালীন সময়ে দ্রুত নৌ-চলাচল ব্যবস্থা থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া বন্দরসহ দেশের যেসব স্থান দিয়ে মালামাল পরিবহন করা হয় সেখানে স্ক্যানার মেশিন বসাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ সুরক্ষায় সড়ক ও মহাসড়কের পাশ দিয়ে পর্যাপ্ত গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- নোয়াখালী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল উদ্দীন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮২ কোটি ১১ লাখ টাকা। আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলি টানেল সংযোগ সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪০৭ কোটি টাকা। শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৮২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়ায় আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ নদী বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৫১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এছাড়া রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭২২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। বিলুপ্ত ছিটমহল ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, এর খরচ ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। হাওরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, এর খরচ হবে কোটি ১৩ লাখ টাকা। রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় হবে ২ হাজার ৯৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকা।