বাসস ক্রীড়া-১২ : ইংল্যান্ড বনাম ক্রোয়েশিয়া : সেমিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লড়াই

330

বাসস ক্রীড়া-১২
ফুটবল-বিশ্বকাপ-ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া
ইংল্যান্ড বনাম ক্রোয়েশিয়া : সেমিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লড়াই
সেন্ট পিটার্সবাগর্, ১০ জুলাই ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : আগামীকাল মস্কোতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তারুন্য লড়বে অভিজ্ঞতার বিপক্ষে। ম্যাচে ইংল্যান্ডের তরুণ তারকারা সম্মুখ সমরে লিপ্ত হবে ক্রোয়েশিয়ার বয়স্কদের বিপক্ষে।
বিগত ২৮ বছরের বিশ্বকাপ ইতিহাসে ইংল্যান্ড সেমি-ফাইনালে পৌঁছাতে পারেনি। ১৯৬৬ সালে শিরোপা জয়ের আগেও একবার শুধু সেমি-ফাইনাল খেলেছে দলটি। অপরদিকে ১৯৯৮ সালের আগে বা পরে সেমি-ফাইনালের ধারে কাছেও ঘেষতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। এবারের মেধাবী প্রজন্মটি ভাগ্যের সহায়তায় ফের পৌঁছেছে শেষ চারে। যা এখন পর্যন্ত বিশ্ব মঞ্চে দলটির সেরা সাফল্য।
আগামীকালের সেমি-ফাইনালে দলগত লড়াইয়ের পাশাপাশি দেখা যাবে ব্যক্তিগত লড়াইও। ব্যক্তিগত লড়াইয়ের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্র উপস্থাপন করা হল।
জর্ডান হেন্ডারসন বনাম লুকা মড্রিচ: চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে লিভারপুলের হারের মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যেই হেন্ডারসনের সুযোগ এসেছে মড্রিচের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেবার। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থাকার অসাধারণ রেকর্ডটি ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাসে কোন খেলোয়াড়ের জন্য সবচেয়ে দীর্ঘ।
মধ্যমাঠে হেন্ডারসনের নেতৃত্বেই আক্রমণভাগে বল যোগানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। যার ফলে রাশিয়ায় জেসে লিংগার্ড ও ডেলে আলি প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে পেরেছেন। তবে এবার মধ্যমাঠে ৩২ বছর বয়সি মড্রিচের নেতৃত্বাধীন ক্রোয়েশিয় দলের সামনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে ইংলিশদের।
এবারের আসরে মড্রিচের রক্ষণভাঙ্গা পাসে ভর করে বেশি গোল পেয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ছন্দ ধরে রেখে অসাধারণ দক্ষতার কারণে আসরে চার ম্যাচের তিনটিতেই সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন এই রিয়াল তারকা। তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সফলতার পাশাপাশি মড্রিচের একটি ব্যালন ডিঅঁর খেতাবের জন্যও সর্বাত্মক চেষ্টা করবে ক্রোয়েশিয়া।
হ্যারি কেন বনাম ডেজান লভরেন : টুর্নামেন্টের সর্বাধিক গোলদাতা কেনের বিপক্ষে খুব বাজে অভিজ্ঞতার একটি মুহূর্ত এখনো কুরে কুরে খাচ্ছে লভরেনকে। গত অক্টোবরে প্রিমিয়ার লীগে কেনের টোটেনহ্যাম হটস্পার্সের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল লভরেনের লিভারপুল। যে ম্যাচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল কেনের।
ওই ম্যাচের ফলাফল এ্যানফিল্ডে লভরেনের ক্যারিয়ারকেই হুমকিতে ফেলে দিয়েছে। তবে ক্লাব পর্যায়ে শেষ পর্যন্ত তিনি ফের কোচ জার্গেন ক্লপের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগের দায়িত্ব নিয়ে তিনি আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে লিওনেল মেসির মত তারকার পথ রুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
কেন এ পর্যন্ত লভরেনের দলের বিপক্ষে পাঁচবার মোকাবেলায় ৫বার গোল করেছেন। বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে ছয় গোল করে শীর্ষ গোলদাতার আসনে বসা কেনের চেষ্টা থাকবে কালকের ম্যাচে ফের গোল করে গোল্ডেন বুট জয়ের সম্ভাবনাকে আরো জোরদার করার।
কিয়েরান ট্রিপায়ার বনাম ইভান পেরিসিচ : এবারের বিশ্বকাপের সেরা আবিস্কারের একজন হচ্ছেন ট্রিপায়ার। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ডেভিড ব্যকহ্যামের খেলার মান এবং ক্রস দেয়ার স্টাইলের কারণে যার নামকরণ হয়েছে ‘বারি ব্যাকহ্যাম’। এবারের বিশ্বকাপে তিনি নেইমার ও কেভিন ডি ব্রুইনার মত দারুন দক্ষতায় গোলের জন্য সতীর্থদের বলের যোগান দিয়েছেন।
সাইথগেটের ৩-৫-২ ফর্মেশনের দলে রাইট ব্যাক কাইল ওয়াকার রক্ষণভাগের অন্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে ট্রিপায়ারকে সুযোগ পেলেই আক্রমণে যাবার রাস্তা করে দিয়েছেন। তবে তার রক্ষণাত্মক দক্ষতার পরীক্ষা আরো একবার দিতে হবে পেরিসিচের সামনে।
ইন্টার মিলানের এই উইঙ্গার এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শীর্ষ টুর্নামেন্টের ১১টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ৫টি গোল করেছেন। আসন্ন ম্যাচে যাদের নিয়ে ক্রোয়েশিয়া আক্রমণে ছক রচনা করছে তাদের একজন হলেন পেরিসিচ।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৯৩৫/মোজা/স্বব