শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ক্রমাগত উন্নত ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন : সরকারি দল

949

সংসদ ভবন, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেধা, প্রজ্ঞা, দক্ষতা, দেশপ্রেম দিয়ে বাংলাদেশকে ক্রমাগত উন্নত ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
গত ৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য আ স ম ফিরোজ তা সমর্থন করেন।
গত ৯ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ ও এ বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ আলোচনায় অংশ নেন কৃষি মন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, হুইপ ইকবালুর রহিম, জাতীয় পার্টির (জেপি) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রপতির তাঁর ভাষণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১১ বছরে বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরেছেন। দিন বদলের সনদ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ তথা ক্ষুধা- দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়ে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। আজ ১১ বছরে দেশ খাদ্য, বিদ্যুৎসহ সব ক্ষেত্রে অসাধরণ সাফল্য এসেছে। দেশ আজ মধ্যম আয়ের দ্বারপ্রান্তে। ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয় এবং ’৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ দেশে প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি গত ১১ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে ৭ভাগ বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে বলেন, গত অর্থবছরে এ হার দাঁড়িয়েছিল ৮.০২ ভাগ। চলতি অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮.২০ ভাগ। এক সময় দারিদ্র হার ছিল ৪০ ভাগ এখন এ হার ২০ ভাগে নেমে এসেছে। অতিদারিদ্র হার ১৭ ভাগ থেকে কমে ১০ ভাগে দাঁড়িয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রঞ্জা, দক্ষতা, দেশপ্রেম দিয়ে জাতিকে এ সব সাফল্য এনে দিয়েছেন। এক সময় বাংলাদেশ বিদেশী সাহায্য নির্ভর ছিল। সে সময় বাজেটের প্রায় ২০ ভাগ বিদেশী সাহায্য থেকে আসত। এখন এ হার শতকরা ২ ভাগের নিচে নেমে এসেছে। দেশ এখন প্রায় স্বনির্ভর।
ড. রাজ্জাক বলেন, বর্তমান সরকার আমলে এক সময়ের খাদ্য ঘাটতির দেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে পরিনত হয়েছে। এখন দেশে খাদ্য উৎপাদন ৪ গুন বেড়ে ৪ কোটি ৩২ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। শ্কাসব্জি, ফলসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। বিশেষ করে বর্তমানে আলু উৎপাদন হচ্ছে ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন।একইভাবে অন্যান্য ফসল উৎপাদন অনেক বেড়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তাঁর যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে বিশ্বের দরবারে সফল আলোক উজ্জ্বল দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ আলোকে আগামী দিনে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিনত হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, যারা অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ কায়েম করতে চেয়েছে, নির্বাচন বয়কট করে গণতন্ত্রহীনতা আনতে চেয়েছে, তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সৎ, যোগ্য ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতা হিসাবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদজ্জামান খান বলেন, তাঁর নেতৃত্বে এক সময়ের খাদ্য, বিদ্যুৎ ঘাটতি আর নৈরাজ্য ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন দেশ আজ উন্নত-সমৃদ্ধির এক সম্ভাবনার দেশে পরিনত হয়েছে।
তাঁর নেতৃত্বে দেশ আজ শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম এমন কি দুর্গম দ্বীপাঞ্চলও এখন ডিজিটালাইজড হয়েছে। সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করে সব ধরনের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি তার মন্ত্রণালয়ে গত ১১ বছরে অর্জিত সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, এ সময়ে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। জননিরাপত্তা অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরাধ করে এখন আর কেউ পার পাচ্ছে না। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এটা সম্ভব হয়েছে গত ১১ বছরে পুলিশের ৮২ হাজার নতুন পদ সৃজন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সাথে সাথে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক ও ঢেলে সাজানো হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ি নতুন নতুন পুলিশ ইউনিট গঠন করা হয়েছে। একইভাবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স অনুযায়ি মাদক নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিজিবি, কোস্ট গার্ডসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগকে অনেক দক্ষ ও উন্নত করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি মন্ত্রণালয়ের অধীন সব সংস্থা গুলোকে নিয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করছি।’ দেশের বড় বড় নদীসহ সব নদী দুষণমুক্ত করতে এলজিআরডি থেকে একটি মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। সে অনুযায়ি একশন প্ল্যান করে কাজ করা হচ্ছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় স্ব-স্ব দায়িত্ব বন্টন করে নিয়ে এ ব্যাপারে কাজ করে হচ্ছে।
তিনি গত ১১ বছরে দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, দেশে সব ক্ষেত্রে উন্নতি অগ্রগতি বেড়েছে। মাথাপিছু আয় অতীতের যে কোন সময়ের তুলানায় বৃুদ্ধি পাওয়ায় মানুষের ভোগের পরিমান বেড়েছে। তাই বর্জ্য বৃদ্ধি পেয়েছ্ েএসব আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।