নারী উদ্যোক্তা বিকাশে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে : টিপু মুনশি

302

ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস): বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, নারী উদ্যোক্তা বিকাশ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘এখনও নারীরা বুটিকস, পোশাক তৈরি কিংবা বিউটি পার্লারের ব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছেন। এসএমই উদ্যোক্তাদের মধ্যে তাদের অবস্থান মাত্র ৭ দশমিক ২১ শতাংেশর মধ্যে। আমরা যদি জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই অংকের ঘরে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্যে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতেই হবে। তাই সরকার নারী উদ্যোক্তা বিকাশে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করছে।’
রোববার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) আয়োজিত ‘করপোরেট কানেকট : স্ট্রেনদেনিং মার্কেট এক্সেস ফর ওম্যান বিজনেস ওনার্স ২০২০ কনফারেন্স এন্ড বিজনেস ফেয়ার’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে আইএফসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি জো ওয়ার্নার, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ডিরেক্টর (জেন্ডার) কারেন গ্রোন, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)’র সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, নারী উদ্যোক্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউইসি কানেকট ইন্টারন্যাশনাল এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এলিজাবেদ এ. ভাজকিউএজ, আইএফসির বেসরকারিখাত বিশেষজ্ঞ হোসনা ফেরদৌস সুমি বক্তব্য রাখেন।
টিপু মনশি বলেন, নারী শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়ায় বাংলাদেশের মেয়েরা এখন শিক্ষায় ছেলেদেরকে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু আমরা নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে পিছিয়ে আছি। ব্যবসা-বাণিজ্যে নারীদেরকে সেভাবে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। এই জায়গায় উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা, সরকার সবাই মিলে একসাথে কাজ করতে হবে।
আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে এসএমই উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীরা ১০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কি ধরনের প্রভাব ফেলবে, সেটা নিরূপন করার জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগায়োগ করেছি। গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদেরকে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামীকাল এফবিসিসিআই প্রতিবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে বলে তিনি জানান।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস দীর্ঘমেয়াদি হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশেষ করে তৈরি পোশাকসহ আমদানি-রফতানির ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমরা বিশ্ব পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছি। কোন ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়লে তা মোকাবেলা করার জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে কোন ঘাটতি দেখা দেবে না।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইএফসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি জো ওয়ার্নার বলেন, বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের বড় সমস্যা হলো তারা ব্যবসা করার পর্যাপ্ত ঋণ সহায়তা পায় না। পাশাপাশি পণ্য বিপণনের জন্য সাপ্লাই চেইন বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে না। এসব কারণে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা অত্যন্ত কম।
তিনি বলেন, আর্থিক অন্তর্ভূক্তির সম্প্রসারণে নারী উদ্যোক্তা বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাংক গ্রুপ সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দেশী ও বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়তা দিতে আগ্রহী।
বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বিপণনে সহায়তা করতে আইএফসি ও ডব্লিউইসি কানেকট ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করেছে। আজ এর উদ্বোধন করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ১২’শ নারী উদ্যোক্তাকে দেশী ও বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।