শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে : সরকারি দল

362

সংসদ ভবন, ২৮ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান আলোকিত বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
গত ৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য আ স ম ফিরোজ তা সমর্থন করেন।
গত ৯ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ ও এ বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ আলোচনায় অংশ নেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, সরকারি দলের বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আবদুল হাই, এস এম শাহজাদা, নাজিমুদ্দিন আহমেদ, সুবিদ আলী ভূইয়া, সিমিন হোসেন রিমি, জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী ও বিকল্প ধারার আবদুল মান্নান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী যখনই ক্ষমতায় আসেন তখনই এ দেশের মানুষ কিছু পায়। আর বিএনপির খালেদা জিয়া আসলে দেশ পেছনের দিকে যায়। শেখ হাসিনা এ দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জনগণের ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শুধু তাই নয় দেশ আজ খাদ্য, বিদ্যুৎসহ অনেক খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা পেয়েছে। দেশ মধ্যম আয়ের দেশের দ্বারপ্রান্তে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিনত হবে। আর এটা সম্ভব হয়েছে এবং হবে শেখ হাসিনার দুরদর্শী ও জনদরদি নেতৃত্বের কারণে।
তিনি বলেন, ’৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি গণতন্ত্র, স্বাধীনতার সব অর্জন মুছে দেয়া হয়েছিল। সেদিন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধী শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী এবং রাজাকার আবদুল আলীমসহ সকল স্বাধীনতা বিরোধীদের পুর্নবাসন করেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধান থেকে জাতীয় ৪ মূলনীতিকে বেয়নেটের খোঁচায় ক্ষত-বিক্ষত করেছেন।
তিনি বিএনপির ক্যাসিনো বিরোধী বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, জিয়াউর রহমানই এ দেশে মদ, জুয়া, লাকী খানের অশ্লীল নৃত্য চালু করেছিলেন। আর শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেননি। তিনি কঠোর হাতে ক্যাসিনো নামক জুয়াকে দমন করেছেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের গত ১১ বছরে দেশের সকল খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের মানুষ এখন খেয়ে পরে সুখে আছে। এখন আর কৃষককে সারের জন্য গুলি খেয়ে মারা যেতে হয় না। সার এখন কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় এখন শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রতি বছরের শুরুর দিন ২ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয় গমনোপযোগি সব শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। এরাই একদিন আলোকিত মানুষ হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নও নিশ্চিত করেছেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মৎস্য প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় ও ইলিশ উৎপাদনে প্রথম স্থানে রয়েছে। গত ৯ বছরে ইলিশের উৎপাদন ৭৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের নেয়া বিভিন্ন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৭ সাল থেকে দেশে উৎপাদিত গবাদি পশু থেকে পবিত্র কুরবানির পশুর চাহিদা পুরণ করা সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের গৃহিত পদক্ষেপের কথা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরে বাংলাদেশ মাংস, দুধ ও ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জণ করবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্যান্য সদস্যরা বলেন, বর্তমান সরকারের রাজস্ব ও মুদ্রা খাতে অনুশ্রিত নীতির ফলে গত অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতির হার ৫.৫ শতাংশ রাখা সম্ভব হয়েছে। ২০০৯ থেকে ‘১৮- ’১৯ পর্য়ন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে আহরিত রাজস্বের পরিমান চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বর্তমান সরকারে সাফল্য। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
তারা বলেন, সরকার সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে অনেক সফলতা অর্জন করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮২ শতাংশ সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। আর অষ্টম পঞ্চম বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে।