সিটি নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি অধিক সুবিধা ভোগ করছে : হাছান

399

ঢাকা, ২১ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি সরকারি দল আওয়ামী লীগের চেয়ে অধিক সুবিধা ভোগ করছে। নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো বিএনপি নেতাদের ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা নেই। তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ি সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগকারি কোন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি অনেক এগিয়ে রয়েছে। তিনি আজ তাঁর মন্ত্রনালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত ও যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে অধিকাংশ দেশের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যগণ কোন সরকারি সুবিধা না নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন। শুধুমাত্র বাংলাদেশে এই সুযোগ নেই, এ দেশে এটি অসম্ভব। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার বিএনপি’র অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি অনেক ভাল অবস্থায় রয়েছে। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, যেমনটি অন্যান্য নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তারা এ ধরনের চেষ্টা করেছিল। তারা বুঝতে পেরেছে, দেশবাসী তাদের সঙ্গে নেই।
মন্ত্রী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ডিস্ট্রিবিউটর সমিতির (বেপদা) সদ্য নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। সভায় তথ্য সচিব কামরুন নাহার, বেপদার সভাপতি খোরশেদ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত গণহত্যা মামলায় দীর্ঘপ্রতিক্ষিত রায় সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছিল। তিনি এই হত্যাকান্ডের নেপথ্য নায়ক, যিনি ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার গণসমাবেশে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান ড. হাছান। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে মহাসমাবেশে যোগ দিতে শেখ হাসিনা মটর শোভাযাত্রাসহকারে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর ওপর এই হামলা হয়েছিল।
তথ্যমন্ত্রী ২০০১ সালে রাজধানীতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলার মামলার রায়ে ৫ জনের ফাঁসির আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নাইমূল আবরার রাহাত হত্যা মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন সম্পর্কিত কোর্ট আদেশ সম্পর্কিত অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, এতে প্রমাণিত হয় বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মতবিনিময় সভায় তরুণ প্রজন্ম এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারে ইতিবাচক ও গঠনমূলক মনোভাব সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে চলচ্চিত্র প্রযোজকদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে মিডিয়ার বড় ভূমিকা রয়েছে। তিনি জাতি গঠনে তরুণ সমাজের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে তাদের প্রতি আহবান জানান। মন্ত্রী বলেন. চলচ্চিত্র হচ্ছে জীবন ও সমাজের প্রতিচ্ছবি এবং সমাজের দর্পণ। একটি ভাল সমাজ ও একটি ভাল বিশ্ব গড়ে তুলতে চলচ্চিত্র আজ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। ফলে সময়ের চাহিদা মেটাতে এখন ভাল চলচ্চিত্র তৈরি করা প্রয়োজন। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সোনালী দিনে ফিরে যাওয়া এবং বিশ্ব চলচ্চিত্র বাজার দখল করা। আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের দুর্দিন কেটে যাচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক ভাল ভাল এবং মানসম্পন্ন ছবি নির্মিত হয়েছে।
ড. হাছান চলচ্চিত্র শিল্পকে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন মিডিয়ার একটি উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল এই শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। তিনি বলেন, সারাদেশে অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে, সাধারণ লোক এখন আর সিনেমা হলে যায় না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার এই শিল্পকে লাভজনক করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। খারাপ দিনগুলো কেটে গেছে। আমি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিনেমা হল মালিকদের সহজ শর্তে ব্যাংক লোন দেয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। এ ছাড়া এ শিল্পে নিয়োজিত শিল্পীদের জন্য একটি কল্যাণ তহবিল গঠনের বিষয়ে কাজ চলছে।