উপকূলীয় জেলেবধূরাও স্বামীর সঙ্গে সমান তালে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন

395

বরগুনা, ২৮ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : উপকূলীয় জেলেবধূরাও স্বামীর সাথে সমান তালে মৎস্য আহরন, প্রক্রিয়াকরণ বা বিপণনে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। সংসারের কাজের অতিরিক্ত এ কাজ করা জেলে পরিবারগুলোর বৌ-ঝি’রা আলাদা কোন মজুরী পান না। জেলেদের জীবন সংগ্রামে তারা সমান নয় বরং একটু বেশিই অবদান রেখে চলেছেন।
তালতলী উপজেলার জয়ালভাঙ্গা গ্রামের জেলে আমজেদ হোসেনের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের প্রতিদিনকার গল্প এরকম…. ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে বেড়িয়ে পরেন স্বামীর সাথে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পায়রা নদী তীরে। রাবেয়া নদীতে পাতা ইলিশের জাল তোলায় স্বামীকে সহায়তা করেন। আহরিত মাছ রক্ষণাবেক্ষণসহ মাছধরা জাল দেখভাল করেন। মাছ বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন তিনি। রোদ, বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ায় হাড়ভাঙা শ্রমে কিন্তু কোন ছুটি নেই। এ অতিরিক্ত কাজের বাইরে পরিবারের খাবার রান্না-বান্না আর ঘরগেরস্থলীর কাজ তো বাধ্যতামূলক আছেই। শিশু সন্তানরে স্কুলে পাঠানোর কাজটিও তাকে করতে হয়। আবার সুর্য অস্ত যাওয়ার পর স্বামীর সাথে নদীতে যাত্রা জাল ফেলতে। কেবল রাবেয়াই নয় উপকূলীয় জেলে বধুরা পুরুষের সাথে সমানতালেই লড়াই করে বাঁচেন।
বরগুনা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, জেলার ৬ উপজেলার পায়রা ও বিষখালী নদী তীরবর্তী এলাকায় তালিকাভূক্ত কার্ডধারী ৪৫ হাজার ৬শত ২১ জন জেলের বাস। এদের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ হাজার জেলেবধূ সরাসরি মাছ ধরার কাজে শ্রম দিলেও পরিবারের অন্য নারীদের সবাই কমবেশী মাছধরা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণনসহ নানা ভাবে পরিশ্রম করেন।
বামনা উপজেলার বিষখালী নদীতীরের কলাগাছিয়া জেলে পল্লীর সুভাষ দাস জানান, নদীতে মাছ ধরায় পরিবারের মহিলাদেরও শ্রম প্রয়োজন হয়। এদের নাম জেলে তালিকায় ওঠেনা।
বরগুনার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহেদ আলী জানিয়েছেন, উপকূলীয় জেলে পরিবারের নারীরা মাছ ধরার কাজে পুরুষকে সহায়তা করে। তাদের সঠিক পরিসংখ্যান মৎস্য দপ্তরে সংরক্ষিত নেই।
বরগুনার বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারী’র প্রধান নির্বাহী হোসনেয়ারা হাসি বলেন, নদী ও সাগর উপকূলে জেলে পরিবারের গৃহবধূরা পুরুষের সাথে সমান তালে কাজ করেন। এসব নারীর জীবন ও স্বাস্থ্যের মান উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগের পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকারী-বেসরকারীভাবে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।