বাসস দেশ-২৯ (লিড) : লাখো মুসল্লির ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন অতিবাহিত : রোববার আখেরী মোনাজাত

443

বাসস দেশ-২৯ (লিড)
বিশ্ব- ইজতেমা
লাখো মুসল্লির ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন অতিবাহিত : রোববার আখেরী মোনাজাত
গাজীপুর, ১০ জানুয়ারী, ২০২০ (বাসস) : লাখো মুসল্লির আল্লাহ আল্লাহ ধ্বনি আর ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেয়া দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের সমাবেশে টঙ্গীর আশ-পাশের এলাকাসহ তুরাগ তীর যেন এক পুণ্যময় জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
দেশ-বিদেশের ইসলামী চিন্তাবিদগণ আজ সকাল থেকেই ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিভিন্ন ভাষায় বয়ান করেন। যা বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়। আগামী রোববারদিনের প্রথম পর্বে আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম ধাপ।
আজ সকাল থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার মুসল্লি ইজতেমা মাঠে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য ছুঁটতে থাকে। কহরদরিয়া খ্যাত তুরাগ নদের তীরে আজ শুক্রবার প্রথম দিনে জুম্মার নামাজে অংশ নিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
জুমার নামাজে ইমামতি করেন কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা জোবায়ের।
প্রথম পর্বের এই ইজতেমায় যোগদানকারী মুসল্লি ছাড়াও জুমার নামাজে অংশ নিতে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমা স্থলে হাজির হন।
জুম্মার নামাজে শরিক হন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লা খান প্রমুখ।
গাজীপুর মেট্রোপুলিটন পুলিশের কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, জুমার নামাজ উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যানজটমুক্তভাবে চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ রাখা হয়েছে। জুমার নামাজে অংশ নেয়া মানুষ যাতে নিবিঘেœ আসা যাওয়া করতে পারে। আগামী ১৭ জানুয়ারী থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে ১৯ জানুয়ারী রোববার আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপের বিশ^ ইজতেমা সমাপ্তি ঘটবে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই বিশ্ব ইজতেমায় পুলিশ, র‌্যাব, সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়। ইজতেমা মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চার শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের করা হয়েছে। ২০টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে সিকি ক্যামেরা। এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, বাইনোকুলার, নাইটভিশন গগলস, পুলিশ ও র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, নৌটহল, হেলিকপ্টার টহল, মুসল্লিদের খিত্তাওয়ারী মোটরসাইকেল টহল ও বিশেষ নিরাপত্তা যন্ত্র। পুলিশের পক্ষ থেকে ১৫টি ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, ১১টি চেকপোস্ট, হেলিকপ্টার ওঠানামার জন্য দুটি পয়েন্টে হ্যালিপ্যাড ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য একটি প্রধান কন্ট্রোল রুম ও আটটি সাব কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ১৯ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২০ সালের দ্বিতীয় ধাপের বিশ^ ইজতেমা।
এবারের বিশ্ব ইজতেমায় এ পর্যন্ত ৪ মুুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (সিটিএসবি) মো. মাকসুদুর রহমান জানান, শুক্রবার সকালে নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার পাইকার গ্রামের সোলায়মানের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৫৫) বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল যান। এছাড়া সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানার পাটগ্রাম এলাকার আমির হোসেনের ছেলে খোকা মিয়া (৬০) বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে হৃদরোগে এবং মধ্যরাতে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার খৈগ্রাম এলাকার শুরা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী (৭০) বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া লাখীলপাড়া এলাকার হাসেম আলী সিকদরের ছেলে ইয়াকুব আলী সিকদার (৮৫) নামে এক মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে ইন্তেকাল যান।
বাসস/ সংবাদদাতা/ এমএআর/২১২০/কেকে