বাংলা একাডেমিতে চলছে পৌষ মেলা

457

ঢাকা, ৫ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে রাজধানীর মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতে বাংলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে তিনদিনের পৌষমেলা।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়,বাংলা একাডেমি এ হামদর্দ এর যৌথ সহযোগিতায় একাডেমি প্রাঙ্গণে পৌষমেলা উদযাপন পরিষদ এর উদ্যোগে ২০,২১ ও ২২ পৌষ এই তিনদিন ধরে চলবে এই মেলা।
বাংলা একাডেমি চত্বরে তিনদিনব্যাপী মেলার আজ দ্বিতীয় দিনে বটতলায় বিভিন্ন শিল্পীরা তাদের নাচ গান পরিবেশন করেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আগতরা লোকায়ত জীবননির্ভর সঙযাত্রা, যাত্রাপালা এবং আঞ্চলিক গান পরিবেশন করছে।
মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতেই উনুনে ভাপা পিঠা,দুধ আর গুড়ের আবেশী গন্ধে মম করছে চারপাশ। পুলি পিঠা,নকশি পিঠা,ডিম পাকন,পাটিসাপটা,ভাপা পিঠা,বিবিখানা পিঠা,ঝাল পিঠা, তিলের পিঠা, মালপোয়া, নারকেল পুলি, পিঠা দুধ পুলি,মুগ পাকন,কুসুম সুখ,ইলিশ মাছের কিমার পিঠাসহ বিভিন্ন জেলার নানা ধরনের তৈরি পিঠার সমারোহ।
মেলায় বিক্রির পাশাপাশি ঠাঁই পেয়েছে ৩০ রকমের আচার,কারুপণ্য ও তৈরি পোশাক।
ক্রেতার পছন্দ ও চাহিদামাফিক চটজলদি তৈরি করে দেয়া হচ্ছে পিঠা। গরম গরম তৈরি পিঠার খাবার আনন্দে খুশি আগ্রহী দর্শনার্থীরা।
নোয়াখালী থেকে আসা লাবণ্য পিঠা ঘরের স্বত্তাধিকারী জান্নাতুল ফেরদৌস পারভীন বলেন, অনেক দিন থেকেই এই ধরনের মেলায় অংশ নিয়ে থাকি।এখানে ১০ টাকা থেকে ১’শ টাকা পর্যন্ত প্রায় ২৮ রকমের পিঠা বিক্রি হয় এই স্টলে।
পৌষমেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, পঁয়তাল্লিশটি স্টল নিয়ে এ পৌষমেলায় শনিবার থেকে এই মেলা শুরু হয়েছে। সরকারি ছুটির দিন থাকায় সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই মেলা চলেছে।
তিনি বলেন, গ্রাম-গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান আর যাত্রাপালার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী পৌষমেলা মেলা। বেহুলার ভাসান যাত্রাপালা দিয়ে শুরু হয়ে আলোমতি-প্রেমকুমার যাত্রাপালার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই পৌষমেলা।
বিশ্বজিৎ বলেন, পৌষমেলার উদ্দেশ্য হলো গ্রামীণ জনপদের লুপ্ত হয়ে যাওয়া বার্ণি মেলার ক্ষুদ্র সংস্করণ এটি। তিনি বলেন, গত একুশ বছর থেকে প্রথমে রমনায়, পরবর্তীতে রবীন্দ্র সরোবরে এবং ২০১৭ সাল থেকে এই পৌষমেলা শুরু বাংলা একাডেমিতে। প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার দর্শনার্থী এই পৌষমেলায় আসেন।
কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার বলেন, আজকের প্রজন্ম ফাস্টফুডের এই যুগে এ ধরনের পিঠা উৎসবের আয়োজন আরো বেশী হওয়া জরুরী। বেশিরভাগ শিশু এসব পিঠার নাম জানেনা-চিনেনা। তারা এই ধরনের উৎসব থেকে তারা বঞ্চিত।তবে আরো বেশি প্রচার পেলে পৌষমেলায় লোকসমাগম আরো বেশি হতো।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল আটটায় সংস্কৃতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এই মেলার উদ্বোধন করেন।পরিষদেও সভাপতি গোলাম কুদ্দুসের সভাপতিত্বে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী,গণ সঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এ মেলা বিকাল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে।