বিচারকদের তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা প্রদানের প্রস্তুতি নিতে আইনমন্ত্রীর আহবান

433

ঢাকা, ১ জানুয়ারি ২০২০ (বাসস) : বিচারকদের তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারিক সেবা প্রদানের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘সরকার আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি সেবার সাথে বিচারক ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সমান তালে এগিয়ে নিতে চায় এবং সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায় যেখানে সকল মানুষ তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় সেবাসমূহ সহজেই গ্রহণ করতে পারবেন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুই হাজার ৬৯০ কোটি টাকার ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।’
আজ ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ৪০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেছেন, এডিআর বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাই প্রশিক্ষণ থেকে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির কৌশলগুলো ভালোভাবে জানতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ- নির্বাহী, বিচার ও আইন সভার কাজের ধরণ আলাদা হলেও সবার আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন এবং সেটি হচ্ছে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করা। এই সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলকে এক লক্ষ্যে, এক প্রেরণায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। এই আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কেবল আইনের শাসন নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র সুসংহতকরণ এবং দারিদ্র দূরীকরণেও বিচারকদের তথা কোয়ালিটি জুডিসিয়ারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই জনগণকে কোয়ালিটি জুডিসিয়ারি উপহার দেয়ার লক্ষ্যে সরকার বিচার বিভাগকে সবধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সমাজে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পেশাগতজীবনে অন্যের অনুসরণীয় হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিচার সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সততার ভিত্তিতে চারিত্রিক দৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা হতে হবে কর্মজীবনের মূলমন্ত্র। বিন্দুমাত্র লোভ কিংবা অসততার কারণে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে যাতে কোনো হতাশা বা বিরূপ ধারণার সৃষ্টি না হয় সেদিকে তাদের খেয়াল রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর পৃথকীকরণের পর বিচার বিভাগে বিচারক স্বল্পতাসহ ব্যাপক এজলাস সংকট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা পর্যায়ে ৮-১০ তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ, পুরাতন জেলাজজ আদালত ভবনগুলোর উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে এখন এজলাস সংকট অনেকটাই দূর হয়েছে। বিগত ১০ বছরে অধস্তন আদালতে ১০২৮ জন বিচারক নিয়োগ দেয়ার ফলে বিচারক স্বল্পতার পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ এর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন সচিব মো. গোলাম সাওয়ার বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।