রাষ্ট্রপতির কাছে মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

695

ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : বাংলাদেশে সদ্য নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত এবং ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত আজ বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে তাদের পরিচয়পত্র পৃথকভাবে পেশ করেছেন। রাষ্ট্রদূতগণ হলেন, মিয়ানমারের ইউ অং কায়েও মোয়ে এবং ভিয়েতনামের ফাম ভিয়েত চিয়েন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন বাসস’কে জানান, রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতদের স্বাগত জানিয়ে আগামী দিনগুলোতে ঢাকায় তাদের দায়িত্বপালনকালে দেশ দু’টির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যকার বর্তমান সম্পর্ককে অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করে বলেন, এই সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাবে। রাষ্ট্রপতি ২০১৮ সালের ৪ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রাণ দাই কুয়াংয়ের সফরের উল্লেখ করে বলেন, তার এই সফরের পর দেশ দু’টির মধ্যকার সম্পর্ক এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যকার বাণিজ্য ২০১৮ সালের মধ্যেই এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে এবং দু’দেশের মধ্যে আরো নতুন নতুন ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খুজে বের করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ভিয়েতনামের নতুন দূত এই সম্পর্ক আরো জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি বন্ধুপ্রতিম দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো জোরদারে সরকারি এবং বেসরকারি পযার্য়ে উচ্চ পযার্য়ে সফর বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত সরকারের ভিশন-২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান ২১০০সহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে আরো ভাল করবে। তিনি বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সবসময়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ সবসময় প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। রাষ্ট্রপতি বলেন, মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে এবং দুটি দেশকেই এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বর্তমান রোহিঙ্গা সমস্যাকে একটি বড় সমস্যা হিসাবে উল্লেখ করে নিরাপদ ও মযার্দার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে এবং স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও বসবাস করতে পারে, রাখাইন রাজ্যে এমন অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
উভয় রাষ্ট্রদূত ঢাকায় তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপালনকালে রাষ্টপতির কাছ থেকে সহযোগিতা কামনা করলে রাষ্ট্রপতি তাঁর পক্ষ থেকে তাদেরকে সবধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাষ্ট্রদূতগণ বঙ্গভবনের এসে পৌঁছুলে রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের একটি সুসজ্জিত চৌকস দল তাদেরকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
পরে রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে রাষ্ট্রপতি দু’দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের চমৎকার সম্পর্ক আরো জোরদারে কিছু নিদের্শনা প্রদান করেন। রাষ্ট্রপতি আগামী দিনগুলোতে রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরো জোরদারে তাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নিদের্শ দেন।