গ্যালাতাসারের বিপক্ষে পিএসজি’র গোল উৎসব, ফিরেছেন নেইমার

163

প্যারিস, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ (বাসস) : প্রায় এক বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোন ম্যাচে মূল একাদশে ফিরেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। আর নেইমারের এই ফেরার ম্যাচে পিএসজি গতকাল তুরষ্কের জায়ান্ট গ্যালাতাসারেকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে। ম্যাচে একটি গোলও করেছেন নেইমার।
পার্ক ডি প্রিন্সেসে মাউরো ইকার্দি ও পাবলো সারাবিয়া প্রথমার্ধে দুই গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে দেন। বিরতির পরপরই বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় নেইমার দলের পক্ষে তৃতীয় গোলটি করেন। ৬৩ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে চতুর্থ গোলটি করার পর বদলী খেলোয়াড় এডিনসন কাভানি ম্যাচের শেষের দিকে পেনাল্টি থেকে আরো এক গোল করেন। আগেই শেষ ১৬’ নিশ্চিত করা পিএসজি এই জয়ে সম্ভাব্য ১৮ পয়েন্টের মধ্যে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-এ’র শীর্ষ দল হিসেবেই পরের রাউন্ডে উঠেছে। প্যারিসের জায়ান্টদের থেকে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে এই গ্রুপ থেকে নক আউট পর্বে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে পুরো ম্যাচে মূল আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নেইমার। চারদিন আগে লিগ ওয়ানে মন্টেপিলারের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে তিনি প্রথম মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন। ম্যাচ শেষে কোচ থমাস টাচেল বলেছেন, ‘মন্টেপিলারের বিপক্ষে কঠিন ম্যাচটিতে নেইমারই ছিলেন মূল ভরসা। ঐ ম্যাচেও সেই ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল। প্রতিদিনই সে উন্নতি করছে। ফর্ম ফিরে পাবার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। আসলেই সে অসাধারণ একজন খেলোয়াড়।’
পিএসজি আগেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছিল। তার উপর যানবাহন ধর্মঘটের কারনে প্যারিসের মেট্রো রেল বন্ধ থাকা সত্তেও পার্ক ডি প্রিন্সেস ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। ম্যাচ শুরুর আগে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশকে টিয়ার গ্যাস মারতে হয়েছে।
তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে স্বাগতিকদের উড়ন্ত পারফরমেন্স। মূল একাদশ থেকে কাল টাচেল বিশ্রামে রেখেছিলেন এ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, থিয়াগো সিলভা, মার্কো ভেরাত্তি ও গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের মত তারকাদের। মধ্যমাঠে কাল মূল একাদশে নেমেছিলেন গত সপ্তাহে সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক হওয়া ১৭ বছর বয়সী টানগাই কুয়াসি।
দু’জন বড় তারকা বেঞ্চে বসে থাকলেও নেইমার ও এমবাপ্পে মিলে তুরষ্ককের দলটিকে বারবার হতাশ করে তুলেছিল। ৩২ মিনিটে এমবাপ্পে উপরে উঠে আসা গ্যালাতাসারে গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরার মাথার উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন ইকার্দির কাছে। সহজ ফিনিশিংয়ে পিএসজিকে এগিয়ে দেন ইকার্দি। মৌসুমে এটি ছিল ইকার্দির ১২তম গোল। তিন মিনিট পর নেইমারের পাসে সারাবিয়া ব্যবধান দ্বিগুন করেন।
গত মৌসুমে রেড স্টারের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি ছিল নেইমারের শেষ ম্যাচ। ৪-১ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে গোল করার পর নেইমার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে শেষ ১৬’র উভয় লেগের ম্যাচেই ইনজুরির কারনে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর ইউরোপীয়ান আসরের প্রথম তিনটি ম্যাচে নিষেধাজ্ঞার কারনে তিনি দলের বাইরে ছিলেন। এরপর ক্লাব ব্রাগার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে আবারো ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে ছিটকে যান। ১৫দিন আগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্রয়ের ম্যাচটিতে নেইমার বদলী হিসেবে দলে ফিরেছিলেন।
৪৬ মিনিটে এমবাপ্পের লো পাস থেকে ব্রাজিলিয়ান তারকা দলের ব্যবধান ৩-০’তে নিয়ে যান। ৬৩ মিনিটে তার পাস থেকে এমবাপ্পে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মৌসুমের পঞ্চম গোল পূরণ করেন। ৮৪ মিনিটে স্পট কিক থেকে কাভানি গোল করলে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি। নেইমার নিজে শটটি না নিয়ে কাভানিকে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ায় দারুন উচ্ছসিত কোচ টাচেল বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে একে অন্যকে সহযোগিতা করার মানসিকতাটা দারুন। কাভানিকে দিয়ে পেনাল্টির শট নেয়াটা তারই উদাহরণ।’
পাঁচ ম্যাচে ২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গ্যালাতাসারে সান্তনাসূচক ইউরোপা লিগ থেকেও ছিটকে পড়েছে। তাদের পরিবর্তে গ্রুপের তৃতীয় স্থান পাওয়া ক্লাব ব্রাগ জায়গা করে নিয়েছে এবারের ইউরোপা লিগে।