ফাতির ইতিহাস গড়ার দিনে ইন্টারকে বিদায় করলো বার্সেলোনা

147

মিলান, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ (বাসস) : সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন বার্সেলোনার টিন এজ তারকা আনসু ফাতি। আর তার গোলেই ২-১ ব্যবধানে জয়ী হয়ে বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করে দিয়েছে ইন্টার মিলানকে।
১৭ বছর বয়সী গিনি বংশোদ্ভূত ফাতি লুইস সুয়ারেজের ক্রস থেকে ৮৬ মিনিটে গোল করে এই রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি দলের জয়ও নিশ্চিত করেন। গ্রুপ-এফ’র বিজয়ী হিসেবে আগেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত হয়েছিল কাতালান জায়ান্টরদের। বার্সার হয়ে এই ম্যাচে ছিলেন না ছয়বারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী লিওনেল মেসি। শেষ ১৬ নিশ্চিতের জন্য লা লিগার শীর্ষে থাকা বার্সার বিপক্ষে অবশ্যই জয়ী হতে হতো সিরি-এ’র শীর্ষ দলটির। জার্মান জায়ান্ট বরুসিয়া ডর্টমুন্ড গতকাল ২-১ গোলে ঘরের মাঠে স্লাভিয়া প্রাগকে পরাজিত করে দ্বিতীয় দল হিসেবে নক আউট পর্বে পৌঁছে গেছে। তৃতীয় দল হিসেবে ইন্টার এখন খেলবে ইউরোপা লিগে।
ইন্টার কোচ এন্টোনিও কন্টে বলেছেন, ‘ফাতির গোলটি আমাকে বেশ হতাশ করেছে। এই গোলটি আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। তবে খেলোয়াড়রা শতভাগ উজাড় করে খেলেছে। তাদের উপর আমি দারুন সন্তুষ্ট।’
সান সিরোতে অভিষিক্ত কার্লেস পেরেজ স্প্যানিশ জায়ান্টদের এগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু রোমেলু লুকাকু বিরতির ঠিক আগে স্বাগতিকদের পক্ষে সমতা ফেরান। ইন্টারের দুই ফরোয়ার্ড লুকাকু ও লটারো মার্টিনেজের তিনটি গোল অফ-সাইডের কারনে বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ছিল এবারের প্রতিযোগিতায় ইতোমধ্যেই পাঁচ গোল করা আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মার্টিনেজের।
বার্সেলোনা কোচ আর্নেস্টে ভালভার্দে বলেছেন, ‘আমাদের খেলার মধ্যেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। কারন আমরা পদ্ধতিগত অনেক পরিবর্তণ এনেছি। শুরুতে আমাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। কারন তারা আমাদের দারুন চাপে রেখেছিল। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে আমরা ততই নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নিয়েছি। গোলদাতা দু’জনেই তরুন, এর মধ্যে আনসুর বয়স অনেক কম। তাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। অন্যদের মতই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা আমরাই জিততে চাই।’
বার্সেলোনার হয়ে আক্রমনভাগের নেতৃত্বে ছিলেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান ও পেরেজ। যে কারনে সুয়ারেজ ছিলেন বদলী বেঞ্চে। ম্যাচের শুরুতেই ইন্টারের আক্রমনের মুখে চাপে পড়ে বার্সেলোনা। পাঁচ মিনিটেই ডানিলো ডি আমব্রোসিও অল্পের জন্য গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। পরের মিনিটেই লুকাকুর গোল অফ-সাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। তবে ২৩ মিনিটে আরটুরো ভিডালের পাস থেকে ২১ বছর বয়সী পেরেজ কোন ভুল করেননি। ঠান্ডা মাথায় ইন্টার গোলরক্ষক সামির হানডানোভিচকে পরাস্ত করে বার্সাকে এগিয়ে দেন। বিরতির ঠিক আগে বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাকু গোল করে মিলানের পক্ষে সমতা ফেরান। তবে ঘন্টাখানেকের মধ্যে মধ্যমাঠে ইনজুরির কারনে স্টিফানো সেনসি, নিকোলো বারেলা, এলেক্সিস সানচেজ ও রবার্তো গাগলিয়ারডিনির অনুপস্থিতি অনুভব করে ইতালিয়ানরা। শেষবারের মত চাপ সৃষ্টি করতে কন্টে মাত্তেও পোলিটানো ও সেবাস্টিয়ানো এস্পোসিটোকে মাঠে নামান। যেহেতু ডর্টমুন্ড আগেই ২-১ গোলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিল সে কারনে ইন্টারের সামনে জয় ভিন্ন অন্য কোন উপায় ছিলনা। সেই ধারাবাহিকতায় ৮০ মিনিটে মার্টিনেজ গোলও করে বসেন। কিন্তু লুকাকুর অফ-সাইড পজিসনের কারনে আবারো গোলটি বাতিল হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে ফাতি দলের জয় নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমেই ২০১১-১২ মৌসুমের পর প্রথমবারের মত ইন্টারের নক আউট পর্বে খেলার স্বপ্নও ভঙ্গ হলো।