বাসস বিদেশ-৩ : আইসিজেতে রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে শুনানি

152

বাসস বিদেশ-৩
আইসিজে-মিয়ানমার
আইসিজেতে রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে শুনানি
দ্য হেগ, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ে তিন দিনের শুনানি মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে।
মিয়ানমারের পক্ষে এ শুনানিতে লড়বেন অং সান সুকি, যিনি একটা সময়ে মায়ানমারের অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এবং শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
এদিকে গত মাসে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’র (ওআইসি) পক্ষে গাম্বিয়া আর্ন্তজাতিক আদালতে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) মতে, গাম্বিয়া মঙ্গলবার প্রথম দফার মৌখিক পর্যবেক্ষণে অংশ নেবে। অন্যদিকে মিয়ানমার প্রথম দফার মৌখিক পর্যবেক্ষণে অংশ নেবে বুধবার।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমার উভয়ে দ্বিতীয় দফার মৌখিক পর্যবেক্ষণে অংশ নেবে যথাক্রমে বৃহস্পতিবার সকালে ও বিকেলে।
মিয়ানমারের সেনবাহিনীর অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামকালে সুকি একসময়ে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিলেন। তিনি মানবিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনের আইকনে পরিণত হয়েছিলেন। জিতেছিলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। কিন্তু মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা অস্বীকার এবং অভিযুক্তদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিতে গিয়ে তিনি বরং এখন নিন্দা ও সমালোচনার সম্মুখীন।
শুনানীতে অংশ নিতে সুকি রোববার দ্য হেগে এসে পৌঁছান। তিনি নেপিদো’র কাউন্সিলর দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপরদিকে বাদী পক্ষে আইনজীবী প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাম্বিয়ার এর্টনী জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবু বাকার মারি তামবাদু।
এদিকে পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলও তথ্য উপাত্ত নিয়ে শুনানিতে উপস্থিত থাকছে। প্রতিনিধিদলে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিও রয়েছেন।
এছাড়া এক যৌথ কূটনৈতিক বিবৃতিতে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস আইসিজেতে গাম্বিয়াকে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘ সমর্থিত বিশ্বের এই শীর্ষ আদালতে শুনানি শুরুর একদিন আগে মানবাধিকার গ্রুপগুলো মিয়ারমারকে বয়কট করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভয়ংকর অত্যাচার নিপড়ীনের শিকার হয়ে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশী রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর এই অভিযানকে জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো একে গণহত্যা বলে বর্ণনা করে।
কিন্তু মিয়ানমার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের শত শত গ্রামে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে।
গত ১১ নভেম্বর পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার গণহত্যা চালিয়েছে মর্মে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করে। দেশটি ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট ওআইসি’র পক্ষে এ অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানায়।
বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া উভয় দেশই ওআইসি’র সদস্য রাষ্ট্র। এছাড়া ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে মিয়ারমারসহ তিন দেশই স্বাক্ষর করেছে।
বাসস/জুনা/১৫২০/এমএবি