শেরপুর মুক্ত দিবস আজ

2467

শেরপুর, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : আজ ৭ ডিসেম্বর শেরপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় বাংলার সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করেন। এদিন ভারতীয় সেনা বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ও মিত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকপ্টারযোগে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌরপার্ক মাঠে অবতরণ করেন। ওই সময় শেরপুরের মুক্তিকামী ছাত্রজনতা জেনারেল অরোরাকে এক সংবর্ধনা দেন। তিনি সংবর্ধনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেরপুরকে হানাদারমুক্ত বলে ঘোষণা দেন। মুক্ত শেরপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। জেনারেল অরোরার সাথে ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্কটালিসহ প্রচুর সংখ্যা বিদেশী সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
মুক্ত দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড অফিস প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহ্বুব। শেরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনায় অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরো, পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানী কমান্ডার সাবেক সোনালী ব্যাংজের জিএম জাফর ইকবাল।
জাফর ইকবাল তার বক্তব্যে বলেন, ৭ ডিসেম্বর সকালে ১১ নং সেক্টরের অধীনে আমার দল প্রথমে শেরপুর প্রবেশ করে। তার আগে ভারতীয় সেনাবাহিনী জেনারেল নাগরার দল শেরপুরে অবস্থান নেন। সকাল ১০ টার দিকে শহীদ দারোগ আলী ময়দানে যৌথ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল অরোরা হেলিকপ্টার করে শেরপুরে অবতরণ করেন। এ সময় জেনারেল অরোরাকে স্বাগত জানান, শেরপুরে অবস্থানরত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। হাজারো জনতার মাঝে জেনারেল অরোরা হেলিকপ্টার থেকে নেমে এসে শেরপুরকে মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দেন। এবং তিনি শেরপুরের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ থেকে আপনারা স্বাধীন বাংলার নাগরিক। আমরা শুধু আপনাদেরকে সহযোগিতা করেছি, এখন দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।
মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে দুপুর ১২টায় জেলা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণেজাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাসহ শহরের রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।