গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে সরকার : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

738

ঢাকা, ২৫ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গণহত্যার ওপর ৯ ডিসেম্বর একটি কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর তখন থেকেই ওই দিনটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে আসছে।’
৯ ডিসেম্বর গণহত্যা দিবস পালনের কোন পটভূমি নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্য সরকারের পররাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক আজ দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়াদী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের সামনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত‘ রক্তাক্ত ২৫ মার্চ : গণহত্যার ইতিবৃত্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব অপরূপ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন(অব.) এবি তাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, লে. জেনারেল(অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক ও ২৫মার্চ রাজারবাগের প্রতিরোধ যোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মিয়া বক্তব্য রাখেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার জন্যই বঙ্গবন্ধু যে স্থানে দাঁড়িয়ে ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন সেই স্থানে শিশুপার্ক নির্মাণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি (জিয়া) মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই এ হীন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। যা দেশের মানুষের কাছে এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আরো বলেন, এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনী এই ঐতিহাসিক উদ্যানেই আত্মসমর্পণ করেছিল। আর ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী এই ঐতিহাসিক উদ্যান থেকেই ভারতীয় সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক সোহরাওয়াদী উদ্যান হলো দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর শিশুরা দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানার জন্যই এই ঐতিহাসিক স্থানে আসবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে এনে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় রয়েছেন বলেই বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করা যেমন সম্ভব হয়েছে তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। তারা ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাতের ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যার কথা শুনে।
আলোকচিত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ হল, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও পিলখানার গণহত্যাসহ মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর চালানো বর্বর গণহত্যার বিভিন্ন ছবি স্থান পায়।