লোককবি বিজয় সরকারের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

239

নড়াইল, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত লোককবি বিজয় সরকারের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার। এ উপলক্ষে কবি বিজয় সরকারের জন্মস্থান সদর উপজেলার ডুমদী গ্রামে আজ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
গ্রামবাসীর আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে কবির প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, স্মৃতিচারণ, বিজয়গীতি পরিবেশন, আলোচনা সভা। দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সফল করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য ভবরঞ্জন বিশ্বাস।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা, গীতিকার ও গায়ক, চারণকবি বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি (১৩০৯ বঙ্গাব্দের ৭ ফাল্গুন) নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তার বাবার নাম নবকৃষ্ণ অধিকারী এবং মার নাম হিমালয়া দেবী। তার শৈশবকাল এবং জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে প্রিয় জন্মভূমি ডুমদিসহ নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায়।ছেলেবেলা থেকেই তিনি (বিজয় সরকার) কবিতা, গান রচনা ও সূরের মধ্যে ডুবে থাকতেন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ায় তিনি আর বেশিদূর এগুতে পারেননি। মাত্র নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে।মতান্তরে তিনি ম্যাট্রিক পাস।এরপর তিনি গানের দল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে।তিনি একাধারে গানের রচয়িতা ও সুরকার।পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ একদিন ভাবি নাই মনে…। এই পৃথিবী যেমন আছে/ তেমনি ঠিক রবে/ সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে/ একদিন চলে যেতে হবে…। তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’…এ ধরনের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ছিলেন তিনি। তিনি প্রায় এক হাজার ৮০০ গান রচনা করেছেন।তিনি অনেক কবিতাও রচনা করেন। কবিগানের আসরেও দুর্দান্ত ছিলেন তিনি।মাতিয়ে তুলতেন দর্শক-শ্রোতাদের । কোন কোন মঞ্চে তৎক্ষণাৎ নিজের রচিত আধ্যাতিœক গান পরিবেশন করে তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের মুগ্ধ করতেন।
কবি গানে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি চারণকবি ও সরকার উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৮৫ সালের ৪ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ার তার মৃত্যুর হয়।সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। শিল্পকলায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালে একুশে পদক (মরণোত্তর) পান উপমহাদেশের প্রখ্যাত এ চারণ কবি।