অনলাইনে সরকারি ফি জমা দেওয়া যাবে

763

ঢাকা, ২৫ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : ঘরে বসেই অনলাইনে পাসপোর্ট, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন বা উত্তোলন সংক্রান্ত ফি জমা দিতে চালু হলো ই-চালান (ইলেক্ট্রনিক-চালান) পদ্ধতি। এর মাধ্যমে দালালের দৌরাত্ব এবং ভোগান্তি যেমন কমবে, তেমনি সময়মত চালানের অর্থ সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হবে।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এর উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, কেবলমাত্র তিনটি সংস্থার সেবা দিয়ে ই-চালান পদ্ধতি চালু হলেও আগামী এক বছর অর্থাৎ পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সরকারের অন্যান্য সকল মন্ত্রণালয় বা সংস্থার সরকারি ফি আদায় কিংবা লেনদেন এর মাধ্যমে করা যাবে। সরকারি ফি প্রদানের ক্ষেত্রে ই-চালান পদ্ধতি অর্থ ও সময়ের অপচয় হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, অর্থ বিভাগের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) মুসলিম চৌধুরী,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কমিশনার মো. মতিউর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অর্থ বিভাগের নির্দেশনায় ও তত্ত্ববধানে প্রধানমনত্রীর কার্যালয়েরর একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম থেকে ই-চালান পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে এমন যে কেউ ই-চালানের মাধ্যমে অনলাইনে রাজস্ব জমা দিতে পারবে।তথ্য প্রদানের পর নির্দিষ্ট ফরম,অনলাইনে পূরণ করার পর ’পরিশোধের পদ্ধতি’ অংশ গিয়ে ‘অনলাইন পরিশোধ’ অপশনটি নির্বাচন করে নির্দিষ্ট একাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে চালানের অর্থ জামা দেওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সরকারি বিভিন্ন সেবার ফি আদায় ও লেনদেনের ক্ষেত্রে চালান ব্যবহৃত হয়। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ব্যাংক অথবা ফটোকপির দোকান থেকে সেবাগ্রহীতার চালন ফরম সংগ্রহ করতে হয়।ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে এ চালান কার্যটি সম্পন্ন করতে গিয়ে একজন নাগরিকের অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হয় এবং যাতায়াতের ভোগান্তি আছে।একইভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৈনিক হিসাব মিলানো,নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অর্থ প্রেরণ এবং দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করতে বাড়তি ব্যয় ও মানসিক চাপ তৈরি হয়।
এ ছাড়া সরকারি সেবার ফি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে গ্রহণ ও দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় সরকারের কোষাগারে যথাসময়ে সেটি জমা হয় না। চালানের মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে কত টাকা জমা আছে বা লেনদেন চালমান রয়েছে তার কোন সঠিক তথ্য থাকে না। কিন্তু ই-চালান পদ্ধতির মাধ্যমে এসব সমস্যা সহজে দূর হবে ।
অনুষ্ঠানে আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, ই-চালান পদ্ধতি ব্যবহার করে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে পারে জনগণ। এতে দালালের দৌরাত্ব কমবে। তাই জনগণের কাছে ই-চালানের বিষয়টি নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য প্রচারনা কার্যক্রম জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন,সব সরকারি সংস্থাকেই ই-চালানের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।কোন মাসে-সরকারের কোন সংস্থা ই-চালান সেবায় যুক্ত হবে, সেই পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থ সচিব বলেন, সরকারের সব প্রেমেন্টই ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি আসলে যথা সময়ে সরকারি কোষাগারে এর অর্থ জমা হবে। এ ছাড়া জনগণও ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে।অনিয়ম ও বন্ধ হবে। দ্রুত সময়ে মূসক (মূল্য সংযোজন কর) এবং আয় করের ক্ষেত্রেও ই-চালান চালু পদ্ধতি চালু করা হবে বলে তিনি জানান।
এলটিইউ কমিশনার মতিউর রহমান রাজস্ব আহরণে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।