সিইউএফএল’র সংস্কারে জাপানের সহায়তা চাইলেন শিল্পমন্ত্রী

265

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন মাধ্যমে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের (সিইউএফএল) নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন চালু রাখতে এ ফ্যাক্টরির সংস্কারে সহায়তা চেয়েছেন।
তিনি বলেন,জাপানি টয়ো ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন নির্মিত এ কারখানা দীর্ঘ দিন ধরে ইউরিয়া সার উৎপাদন করে আসছে। রিয়েক্টরে কারিগরি সমস্যা থাকায় কারখানাটিতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাই কারখানাটির আধুনিকায়ন ও সংস্কারে জাপানের সহযোগিতা দরকার।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো আজ বৃহস্পতিবার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ সহায়তা চান। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগসহ শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতকালে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের চিনি শিল্পখাতে পণ্য বৈচিত্রকরণ,সার কারখানার আধুনিকায়ন, দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রশিক্ষণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, মেডিক্যাল ও সায়েন্টিফিক ইক্যুইপমেন্ট শিল্পখাতে জাপানি বিনিয়োগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশাল বাজার সুবিধা ও জনপ্রিয়তা বিবেচনা করে জাপানি টয়োটা কোম্পানি বাংলাদেশে গাড়ি উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে পারে। এ কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে টয়োটা বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে জাপানের বাজারেও গাড়ি রপ্তানির সুযোগ পাবে।
তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চিনি কলগুলোতে বাইব্যাক পলিসির আওতায় ডিস্ট্রিলারি স্থাপনসহ পণ্য বৈচিত্রকরণে জাপানের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পরামর্শ দেন। একইসাথে বাংলাদেশের উদীয়মান হেলথ্ ইন্ডাস্ট্রির সুবিধা নিতে মেডিক্যাল ও সায়েন্টিফিক ইক্যুইপমেন্ট উৎপাদনখাতে বিনিয়োগের জন্যও মন্ত্রী জাপানী উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত ও সর্ববৃহৎ উন্নয়ন অংশীদার হতে পেরে জাপান গর্বিত। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে জাপান কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, মেট্রোরেলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে জাপানি বিনিয়োগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি বাস্তবসম্মত অটোমোবাইল পলিসি প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেন। এ পলিসি প্রণয়ণে জাপান বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দিতে আগ্রহী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছে যাবে। এক সময় বাংলাদেশের তৈরি গাড়ি জাপানের বাজারেও বিক্রি হবে। তিনি বাংলাদেশে মোটরসাইকেল শিল্পের বিকাশে এর রেজিস্ট্রেশন ফি ও ট্যাক্স যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের ওপর গুরুত্ব দেন। ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ যোগান থেকে সারের সরবরাহ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জাপান টোবাকো বাংলাদেশ সরকারকে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি তামাক শিল্পের ওপর আরোপিত এক্সাইজ ডিউটি যৌক্তিককরণের আহ্বান জানান।