উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত

503

ঢাকা, ১ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : উৎসবমুখর পরিবেশে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে উচ্চশিক্ষা’।
এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা, উদ্বোধনী সংগীত, শোভাযাত্রা, গবেষণা ও আবিষ্কার বিষয়ক প্রদর্শনী ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপনের জন্য ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম সাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও হলকে সজ্জিত করা হয় আলোকসজ্জায়।
সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন চত্বরে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত ও উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এর আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মল চত্বরে জমায়েত হন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান র‌্যালির নেতৃত্ব দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে সকাল এগারোটায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর।
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বাঙালী মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ, জ্ঞানচর্চা তথা এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনেক স্বনামধন্য গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও মনীষীর।
তিনি শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকলের গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি ও সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
এরআগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে নতুন একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়।
এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে দুর্লভ পান্ডুলিপি প্রদর্শনী, কার্জন হলে বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি ও গবেষণা প্রদর্শনী, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির উদ্যোগে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বাংলা বিভাগের উদ্যোগে নাট-মন্ডলে ‘হরপ্রসাদ-শহীদুল্লাহ স্মারক বক্তৃতা’, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ও শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হল দিনব্যাপী নিজস্ব কর্মসূচি গ্রহণ করে।