ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দ্রুত পুনর্বাসন করা হবে : কৃষিমন্ত্রী

375

ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তান্ডবে ১৬ জেলার ৫০ হাজার ৫০৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পেলে দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন করা হবে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ২৬৩ কোটি ৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৩৬ হেক্টর, ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ ৭২ হাজার ২১২ মেট্রিকটন। আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ২৬৩ কোটি ৫ লাখ টাকা। মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৫০ হাজার ৫০৩ জন।’
আব্দুর রাজ্জাক আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ঘুর্ণিঝড়ে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। অতিরিক্ত কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি বাহমশবায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নতুনভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে। এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের শুধু ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পাশেই নয়, সকল কৃষকদের সুযোগ সুবিধা নিয়মিত দেখভালের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল দেশের উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চলের জেলা সমূহের উপর আঘাত হেনেছে। ঝড়ের আঘাতের ফলে উপকূলীয় ও পার্শ্ববর্তী ১৬টি জেলার ১০৩টি উপজেলায় এ ঝড়ের প্রভাব পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে প্রাথমিকভাবে ১৬টি জেলায় রোপা আমন, শীতকালীন শাক সবজি, সরিষা, খেসারি, মসুর ও পান ফসল আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘূর্ণিঝড়ে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার রোপা আমন, শীতকালীন সবজি, সরিষা, খেসারি ও পানের বরজের জমি আক্রান্ত হয়েছে।
ফসলের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরে তিনি জানান, আক্রান্ত ফসল সমূহের আবাদকৃত জমির পরিমাণ ও ২০ লাখ ৮৩ হাজার ৮ শত ৬৮ হেক্টর। আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬ হেক্টর ( মোট আবাদকৃত জমির ১৪ভাগ)।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাক জানান, রোপা আমন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৫ শত ৭৪ হেক্টর, শীতকালীন সবজি ৪১৬ হাজার ৮৮৪ হেক্টর সরিষা, এক হাজার ৪৭৬ হেক্টর ৩১ হাজার ৮৮ হেক্টর, মসুর ১৯৫ হেক্টর, পান ২ হাজার ৬৬৩ হেক্টর ও অন্যান্য ৩ হাজার ১২৬ হেক্টর।
তিনি আরো জানান, চলতি রবি পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে ৬৪টি জেলায় ৮০ কোটি ৭৩ লাখ ৯১ হাজার ৮শ টাকার কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে গম, ভূট্টা, সরিষা, সূযর্মুখী, চীনাবাদাম, শীতকালীন সবজি, শীতকালীন মুগ, পেঁয়াজ, গ্রীষ্মকালীন মুগ, তিন ফসলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণের কর্মসূচি চলমান রয়েছে।