বাসস দেশ-৫ : হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ

162

বাসস দেশ-৫
হলি আর্টিজান-হামলা
হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
ঢাকা, ১ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে জাতি।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান বেকারিতে অতর্কিত জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। এ সময় জঙ্গিদের বোমা হামলায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন।
অন্য সময় হলি আর্টিজান ভবনটি বন্ধ থাকলেও আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে চার ঘণ্টার জন্য খুলে দেওয়া হয়। সকাল ১০টার আগেই কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে হলি আর্টিজানের সেই ভবনের সামনে বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি, দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, ডিএমপি কমিশনার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহম্মেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মর্মান্তিক ও নৃশংস এ ঘটনার তদন্তে সরকার বসে নেই।’ পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট হবে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ হামলা হচ্ছে। তবে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তারা অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তারা নির্মূল হয়েছে এটা বলব না, তবে তারা দুর্বল হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা নিরাপদ আছি।’
র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ বলেন, যতদিন জঙ্গিদের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যে কোন মূল্যে তাদের মুলোৎপাটন করা হবে।
এদিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে অকালে আত্মত্যাগকারী দুই পুলিশ কর্মকর্তার স্মরনে পুরাতন গুলশান থানার সামনে আজ ‘দীপ্ত শপথ’ নামে একটি ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের এই দিনে হলি আর্টিজান বেকারিতে চালানো সন্ত্রাসী হামলা জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করেছিল গোয়েন্দ এসি রবিউল ও ওসি সালাহউদ্দিন। তাদের মারা যাওয়ার শোককে আমরা শক্তিতে রুপান্তর করেছি। আমরা পেশাদারিত্বের সাথে জীবনবাজি রেখে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করেছি।’
তিনি বলেন, এ হামলার পর ছোট-বড় ৭০টি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। অভিযানকালে অনেক জঙ্গি নিহত এবং অনেককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয় বলেও জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ ধরনের বড় ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম পুলিশ সম্পন্ন করেছে। আগামী সপ্তাহে এ হামলার ঘটনার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে নয়টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে অতর্কিতে আক্রমণ করে পাঁচ জঙ্গি। তারা ভেতরে থাকা সবাইকে জিম্মি করে এবং গুলি করে ও কুপিয়ে ১৭ বিদেশি ও ৩ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করে। সেখানে তাৎক্ষণিক অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের বোমায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা । ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রবিউল করিম ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সালাহ উদ্দিন খান। আহত হন র‌্যাব-১-এর তখনকার অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মাসুদ, পুলিশের গুলশান অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুল আহাদসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য।
বাসস/নিজস্ব/এফএইচ/এমএমবি/১৫৪০/-আসচৌ