নাটোর চিনিকলের আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে ১৫ নভেম্বর

258

নাটোর, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : এক লাখ ৬৩ হাজার টন আখ মাড়াই করে ১৩ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নাটোর চিনিকলের আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি। এ লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
৩৬তম আখ মাড়াই মৌসুম সফল করতে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কারখানার প্রয়োজনীয় মেরামতসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজ শেষ করা হয়েছে। চিনিকলের নিরবচ্ছিন্ন মাড়াই কাজ অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যে কারখানার বয়লারে আগুন দেয়া হয়েছে। মিলগেট ছাড়াও ৫১টি আখ ক্রয় কেন্দ্রের ক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কেন্দ্রের আঙিনা প্রস্তুত ও ডিজিটাল ওজন মেশিন সংযোজন করা হয়েছে। জমিতে আখের জরিপ কাজ শেষে উৎপাদিত আখের পরিমাণ বিবেচনা করে ই-পূর্জি ও ই-গেজেটের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে আখ ক্রয় করা হবে। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কৃষকদের আখের মূল্য পরিশোধ করা হবে।
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মোঃ রুস্তম আলী জানান, চিনিকল এলাকার আখ চাষীদের প্রণোদনা প্রদান করতে পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এ ঋণের অর্থে পাঁচ হাজার ২৭৮জন কৃষক তাদের জমিতে আখ উৎপাদনে বীজ ও সার সংগ্রহ করেছেন এবং জমিতে সেচ দিয়েছেন। চিনিকলে কৃষকদের বিক্রয়লব্ধ আখের মূল্য থেকে এ ঋণের অর্থ সমন্বয় করা হবে।
নাটোর চিনিকল এলাকায় চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ১৫৩ একর জমিতে দুই লাখ ৫৪ হাজার টন আখ উৎপাদিত হয়েছে। চিনিকলের আটটি সাব-জোনের ৫১টি সেন্টারের অধীন কৃষকদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মানসম্পন্ন আখ চিনিকলে সরবরাহের জন্যে অনুরোধ জানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে গুড় উৎপাদনে আখ সরবরাহ না করার জন্যেও পোষ্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছে। ২৭ জুলাই প্রকাশিত সরকারের প্রজ্ঞাপন এস আর ও নম্বর ২৫০-আইন/ ২০১৯ নাটোর চিনিকল এলাকায় ১ জুলাই ২০১৯ থেকে ৩১ মে ২০২০ পর্যন্ত পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই ও গুড় তৈরী নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে চিনিকল এলাকায় শতাধিক পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে চিনিকল কর্তৃপক্ষ নাটোরের জেলা প্রশাসন ও নলডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের তিনটি অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে অন্তত ১৮টি পাওয়ার ক্রাশার জব্দ এবং বেশ কয়েকজনকে জেল-জরিমানা প্রদান করা হয়। আগে চিনিকল এলাকাতে ১৩৬টি পাওয়ার ক্রাশার চললেও উদ্বুদ্ধকরণ ও অভিযানের ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ৮০টি পাওয়ার ক্রাশার চলছে বলে জানিয়েছেন চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মোঃ রুস্তম আলী।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাইদুজ্জামান বলেন, সরকারের ভারী এ শিল্পকে বাঁচাতে এলাকায় পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে প্রশাসনিক অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এফ এম জিয়াউল হক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আখের সরবরাহ পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বাসস’কে বলেন, আসন্ন মৌসুমে চিনিকল চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে।
বাসস/সংবাদদাতা/১০-৪১/নূসী