বাজিস-২ : বগুড়ায় দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ পেয়েছে ১৭৮টি পরিবার

236

বাজিস-২
বগুড়া- বাসগৃহ
বগুড়ায় দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ পেয়েছে ১৭৮টি পরিবার
বগুড়া, ৮ নভেম্বর ২০১৯ (বাসস) : জেলায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দ গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় মোট ১৭৮টি পরিবার দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ পেয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে জেলার ১২টি উপজেলায় এসব গৃহনির্মাণ করা হয়।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি বাসগৃহের প্রাক্কলিত মূল্য ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১ টাকা। মোট ৪ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৫১৮ টাকা ব্যয়ে জেলায় এসব বাসগৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়।
কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, গৃহকর্মী, রিক্সা-ভ্যানচালক, বাউলসহ বিভিন্ন অস্বচ্ছল ব্যক্তিরা এসব দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ পেয়েছে।এসব বাড়ির নাম ফলকে লেখা রয়েছে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান/টিআর-কাবিটা কর্মসূচির আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৬টি বাসগৃহ নির্মান হয়েছে। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই বাসগৃহ নির্মান শেষে ১৩ অক্টোবর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি প্রতিনিয়ত বাসগৃহ নির্মানের খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সরোজমিনে দেখেছেন। প্রতিটি গৃহে দু’টি কক্ষ, দু’টি বারান্দা, একটি রান্নাঘর, একটি করিডরসহ রয়েছে পাকা ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা।এছাড়াও পর্যায়ক্রমে থাকছে টিউবয়েল ও সৌর বিদ্যুতের সুবিধা। নির্মিত প্রতিটি বাসগৃহই আধুনিকমানের সুযোগ-সুবিধা অনুসারে নির্মাণ করা হয়েছে।
বিনাখরচে নিজ জায়গায় এমন ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা এইসব সুবিধাভোগীরা। বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ভান্ডারপাইকার জহুরা বেওয়া জানালেন, ‘শেখ হাসিনা হামাক বাড়ি ব্যানা (বানিয়ে) দিছে, আগে বাপের বাড়িত আছনো (ছিলাম) একন (এখন) নিজের বাড়িত থাকি। শেখ হাসিনা মেলা দিন ব্যাঁচা থাকুক’। চোখে ছিল তার আনন্দের অশ্রু ধারা। মুখে ছিল তৃিপ্তর হাসি।
শেখেরকোলার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ডালিম জানান, জহুরা বেওয়া তার ছেলে ও ছেলের বউসহ এক অন্ধবোনকে নিয়ে নতুন বাড়িতে উঠেছেন।স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি অনেক কষ্টে থাকতেন বাবার দেয়া জায়গায় ঝুপড়ি ঘর করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বাড়ি পেয়ে তারা এখন আনন্দে দিনযাপন করছে।
একই উপজেলার সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ার ছাবেদন নেছা বলেন, ‘নিজের স্বামীর সামান্য কিছু জায়গা থাকলেও ঘর ছিলনা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাকাঘর পেয়ে জীবনের অবাস্তব স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। শেষ বয়সে ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিদের নিয়ে বিনাপয়সায় পাকাঘরে থাকতে পারবো এর চেয়ে খুশি আর কিছু হতে পারেনা।’
সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, সদর উপজেলায় ১৬টি বাসগৃহ নির্মান শেষে হস্তান্তর করা হয়েছে। সার্বক্ষনিক তদারকির মাধ্যমে সুন্দরভাবে কাজ শেষ হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই।
প্রসঙ্গত, জেলার ১২টি উপজেলায় অস্বচ্ছল গৃহহীনদের জন্য এমন গৃহ নির্মাণ করেছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ।
এরমধ্যে সোনাতলা উপজেলায় ২১টি, সারিয়াকান্দিতে ১৯টি, শিবগঞ্জে ১৬টি, আদমদীঘিতে ১২টি, দুপচাঁচিয়াতে ১২টি, কাহালুতে ১১টি, শাজাহানপুরে ১১টি, নন্দীগ্রামে ১৪টি, শেরপুরে ১৪টি, গাবতলীতে ১৪টি, ধুনটে ১৮টি এবং বগুড়া সদরে ১৬টি গৃহ নির্মাণ করা হয়।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ গত ১৩ অক্টোবর সংশ্লিষ্টদের কাচে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল জানান, অস্বচ্ছল গৃহহীন পরিবার যাদের কমপক্ষে দুই শতাংশ পরিমাণ জমি রয়েছে অথবা ওই পরিমাণ জমি দান, লিজ অথবা স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক প্রাপ্ত হয়ে মালিকানাসহ দখলে রয়েছে তাদেরকে এই কর্মসূচির আওতায় গৃহনির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৮১৫/এমকে