বাসস দেশ-৩২ : রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

518

বাসস দেশ-৩২
বাংলাদেশ-ভারত-ডায়লগ
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কক্সবাজার, ২ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের ইনানীতে একটি তারকা হোটেলে ২ দিন ব্যাপি বাংলাদেশ-ভারত নবম ফ্রেন্ডশিপ ডায়লগ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার এই বোঝা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বহন করতে পারিনা। এই সমস্যা আমাদের একার নয়। এই সমস্যা সমাধানে ভারতসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গা চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই মানবিকতা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন- দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ভারত এক সাথে কাজ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সকল ধরণের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে স্থান নেই। কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন- বাংলাদেশ ভারত নবম ফ্রেন্ডশীপ সংলাপ সীমান্তে নদীর পানি বন্টন, তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানী, সমুদ্র অর্থনীতিসহ পারস্পরিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দু’দেশের মাঝে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। দু’দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ উভয় দেশের সম্পর্কে নব দিগন্তের সূচনা করেছে। বন্ধুত্ব সংলাপ এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মতবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশ পারস্পরিকভাবে লাভবান হতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক গভীর এবং বিশ্বাসের। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যার সূচনা হয়েছিলো। দুই দেশের সুদীর্ঘ এই সম্পর্ক আগামীতে আরো গভীর হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মোদী সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখছে। দু’দেশের সম্পর্ক সুরক্ষিত করে পারস্পরিক বিশ্বাসযোগ্যতার মাধ্যমে সন্ত্রাস দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উভয় দেশের ভূমিকা মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ-ভারত নবম ফ্রেন্ডশিপ ডায়লগ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি লে. কর্নেল (অব:) মোহাম্মদ ফারুক খান এমপি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের রাজ্যসভার সদস্য এম জে আকবর, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও আশেক উল্লাহ রফিক, ফ্রেন্ডস বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. রাধা তমাল গোস্মামী, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর নিজিওনাল স্টাডিজ এর চেয়ারম্যান এবং ফ্রেন্ডস বাংলাদেশ এর প্রধান সমন্বয়ক আ স ম শামছুল আরেফিন।
‘কক্সবাজার ঘোষনা’র মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে ২দিন ব্যাপি এই ফ্রেন্ডশীপ ডায়লগ। ঘোষনাপত্রে বাংলাদেশ-ভারত দ্ইু প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বলানী খাত, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সংকট মোকাবেলায় সমন্বিত পরিকল্পনাসহ সম্ভাবনাময়ী আরো বিভিন্ন খাতের সার্বিক উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এই সংলাপে ভারতের ২৬ জন এবং বাংলাদেশের ৫৪ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/২১৫৬/কেকে