কর্মীদের আচরণ ভালো না হলে সেই উন্নয়নের দাম নেই : ওবায়দুল কাদের

426

চট্টগ্রাম, ২৭ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উন্নয়নের সাথে কর্মীদের আচরণ ভালো না হলে সে উন্নয়নের দাম নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের সাথে আপনাদের আচরণ, এ দুই নিয়ে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা।
ওবায়দুল কাদের আজ দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কিং অব চিটাগাং এ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ৬ সাংগঠনিক জেলার চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সন্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি প্রমুখ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
‘নিজের ঘর ও দল থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী বাংলাদেশের ইতিহাসে অনান্য নজির স্থাপন করেছেন। তিনি দুর্নীতি সন্ত্রাস, মাদক ও ভূমি দখলের বিরুদ্ধে নিজের দলকেও ছাড় দেননি। শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন নিজের ঘর ও দল থেকে। অথচ মির্জা ফখরুলদের মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা মানে ভূতের মুখে রাম নাম। হাওয়া ভবন নাকি খাওয়া ভবন ছিল তা জনগণ এখনো ভুলে যায়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার জালে একে একে সব অপরাধী ধরা পড়বে, ক্রমান্বয়ে অন্য দলের লোকজনকেও ধরা হবে। তার নেট থেকে কোনো অপরাধীই পার পাবে না, তিনি যেই হোন না কেন।’
তিনি বলেন, আমরা লোক দেখানো শুদ্ধি অভিযান করছি না। আমরা প্রমাণ করব, শেখ হাসিনা প্রমাণ করবেন- অপরাধ অপকর্মের বিরুদ্ধে তিনি কতটুকু কঠোর আছে সেটা। শুদ্ধি অভিযানে আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির নেতারা কে কি অপরাধ অপকর্ম করছে তার খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের কোণঠাসা করে আওয়ামী লীগ টিকতে পারবে না। অনেক জায়গায় শুনি ত্যাগীদের বাদ দিয়ে বসন্তের কোকিলদের দলে এনে তাদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। দল আজ ক্ষমতায় আছে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী না, ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না।
দল ক্ষমতায় না থাকলে কোথায় যাবেন, কোথায় পালাবেন প্রশ্ন রেখে নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মাটি মানুষের দল, আমরা তাদের সাথে মিশে থাকতে চাই। মানুষকে নিয়ে তাই বেঁচে থাকতে হবে।’
‘তুচ্ছ ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির হাতে ইস্যু তুলে না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন ‘আবরার হত্যাকারীরা গ্রেফতার হয়েছে। নুসরাত হত্যার বিচার হয়েছে, যা ইতিহাসে নজির স্থাপন করেছে।’
কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা একজনেরও বিচার করেনি। চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় বিএনপির নেতা জড়িত থাকলেও বিএনপি সরকার সে হত্যার বিচার করেনি। সে হত্যার বিচার তার পরিবার পায়নি।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক এমপিকেও দুদক মামলা দিচ্ছে, সিরাজগঞ্জের এক মেয়র কারাগারে আছে, আমাদের সাবেক এক মন্ত্রীকে আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। আদালতে গিয়ে প্রমাণ করতে হবে নির্দোষ। আদালতে সরকার হস্তক্ষেপ করে না। দুদকও স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
চট্টগ্রামের কালুরঘাটে দুটি সেতু হবে জানিয়ে সেতু মন্ত্রী বলেন, একটি রেল সেতু, অন্যটি সড়ক সেতু। এতে করে কালুরঘাট নিয়ে যে বিভ্রান্তি তার অবসান হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চার লেনে উন্নীত করা হবে। চট্টগ্রাম নগরীতে মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং চট্টগ্রামে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় মেট্রোরেল যুক্ত হবে ।